পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম | অফিসিয়াল নিয়ম ২০২৩

আপনি একটা বিষয় ভালো করে লক্ষ্য করতে পারবেন যে, আমরা শুধুমাত্র নতুন ভোটার আইডি গুলো অনলাইন থেকে ডাউনলোড করতে পারি।

পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম | অফিসিয়াল নিয়ম ২০২৩Download Old Nid Card
পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম

তবে আমাদের মধ্যে যে সকল মানুষ ২০১৬ সাল এর আগে তাদের ভোটার নিবন্ধন করেছেন। তারা অনেক চেষ্টা করার পরেও অনলাইন থেকে তাদের পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারেনা। 

এর মূল কারণ হলো, আপনি যদি পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে চান। তাহলে আপনাকে বেশ কিছু কাজ করতে হবে।

আর আপনি যখন সেই কাজ গুলো সঠিক ভাবে করতে পারবেন। তারপর আপনি আপনার প্রয়োজনীয় পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন। 

আর আজকে আমি আপনাকে পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার উপায় গুলো জানিয়ে দিবো। তাই আর দেরী না করে চলুন, সরাসরি মূল আলোচনা তে ফিরে যাওয়া যাক। 

কিভাবে অনলাইন থেকে পুরাতন আইডি কার্ড বের করবেন?

আপনি যদি ২০১৬ কিংবা ২০১৭ সালের আগেই আপনার ভোটার নিবন্ধন করে থাকেন।

তাহলে কিন্তু সেই মানুষ গুলো আর অনলাইনে পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন না।

তবে আপনি আপনার একাউন্টে লগ ইন করার পর আপনার ভোটার আইডি কার্ড চেক করে নিতে পারবেন। 

কিন্তু আপনি যদি আপনার পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে চান। তাহলে আপনাকে যে সকল কাজ করতে হবে, সে গুলো হলো,

  1. সবার প্রথমে আপনাকে থানায় গিয়ে একটি সাধারন ডায়েরী করতে হবে। 
  2. এরপর আপনাকে এনআইডি ওয়েবসাইট এর মধ্যে গিয়ে রেজিষ্ট্রেশন করতে হবে। 
  3. তারপরে আপনাকে পুনরায় রিইস্যুর জন্য আবেদন করতে হবে। 
  4. উক্ত কাজটি করার পর আপনাকে রিইস্যুর ফি পরিশোধ করতে হবে। 
  5. এখন আপনাকে রিইস্যুর আবেদন সাবমিট করতে হবে। 
  6. সবশেষে আপনাকে আপনার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে হবে। 

তো আপনি যদি উপরের কাজ গুলো সঠিক ভাবে অনুসরন করতে পারেন। তাহলে আপনি আপনার পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন।

তবে এই ধাপ গুলো অনুসরন করার জন্য আপনাকে বেশ কিছু পদ্ধতি অনুসরন করতে হবে। যেগুলো এখন আপনি আপনাকে ধাপে ধাপে দেখিয়ে দিবো। 

প্রথমে থানায় গিয়ে সাধারন ডায়েরী করুন

দেখুন যেহুতু আপনার ভোটার আইডি কার্ড টি অনেক পুরাতন। সেহুতু সবার প্রথমে আপনাকে আপনার নিকটস্থ থানায় গিয়ে একটি সাধারন ডায়েরী করতে হবে।

এবং সেখানে উল্লেখ থাকতে হবে যে, আপনি আপনার পুরাতন আইডি কার্ড টি হারিয়ে ফেলেছেন কিংবা আপনাকে উল্লেখ করতে হবে আইডি কার্ড টি নষ্ট হয়ে গেছে। 

এবং যখন আপনি থানায় গিয়ে সাধারন ডায়েরী করবেন। তখন অবশ্যই আপনি আপনার ভোটার আইডি কার্ড এর মধ্যে থাকা নম্বরটি উল্লেখ করতে হবে।

তবে আবেদন করার সময় আপনি অবশ্যই একটি কপি আপনার কাছে রাখবেন। 

আর থানায় আবেদন করার সময় সেই আবেদন এর কপিটি নিয়ে। থানায় দায়িত্বরত অফিসার এর নিকট থেকে সীল বা স্বাক্ষর নিতে হবে।

এটি হলো, আপনার পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার সর্ব প্রথম ধাপ। যখন আপনি এই কাজটি করবেন, তারপর আপনাকে পরবর্তী কাজ করতে হবে। 

এনআইডি ওয়েবসাইটে রেজিষ্ট্রেশন করুন

তো যখন আপনার থানায় গিয়ে সাধারন ডায়েরী করা সম্পন্ন হবে। তারপর আপনাকে বাংলাদেশ এনআইডি এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট থেকে রেজিষ্ট্রেশন করতে হবে।

তবে আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন। যাদের আগে থেকেই এই ওয়েবসাইটে রেজিষ্ট্রেশন করা থাকবে। মূলত তাদের আর নতুন করে রেজিষ্ট্রেশন করার দরকার হবেনা।

আর এখানে একটা কথা বলে রাখা উচিত। সেটি হলো, যখন আপনি উক্ত ওয়েবসাইট এর মধ্যে নতুন করে রেজিষ্ট্রেশন করবেন।

তখন আপনাকে আপনার ফেস ভেরিফিকেশন করতে হবে। আর আপনি যখন ফেস ভেরিফিকেশন করবেন। তখন আপনার নিকট যে অ্যাপস এর প্রয়োজন হবে। সেই অ্যাপস এর নাম হলো, NID Wallet.

তবে এই রেজিষ্ট্রেশন করার জন্য আপনাকে যে সকল ধাপ অনুসরন করতে হবে। সেই ধাপ গুলো নিচে স্টেপ বাই স্টেপ দেখানো হলো। যেমন,

  1. সবার প্রথমে আপনি আপনার মোবাইল অথবা কম্পিউটার থেকে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন এর ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন। 
  2. নতুবা সরাসরি এখানে ক্লিক করে উক্ত ওয়েবসাইট এর রেজিষ্ট্রেশন অপশনে প্রবেশ করতে পারবেন।
  3. রেজিষ্ট্রেশন করার সময় আপনাকে আপনার ব্যক্তিগত এনআইডি নম্বর, জন্ম তারিখ সহো নিচে থাকা ক্যাপচা কোড টি সঠিক ভাবে পূরণ করতে হবে।  
  4. তারপর আপনাকে আপনার ঠিকানা প্রদান করতে হবে। আপনি এখানে আপনার স্থায়ী ও অস্থায়ী ঠিকানা সঠিকভাবে উল্লেখ করে দিবেন। 
  5. এখন আপনাকে ফেস ভেরিফিকেশন করতে হবে। আর ফেস ভেরিফিকেশন করার জন্য আপনাকে NID Wallet নামের অ্যাপস টি ইনস্টল করতে হবে। 
  6. আর যখন আপনি ফেস ভেরিফিকেশন করবেন। তখন আপনাকে নিজের চেহারার সামনে মোবাইল টি ভালোভাবে ধরতে হবে।
  7. তারপর আপনাকে বারবার চোখের পলক ফেলতে হবে। এবং আপনার মাথা একবার বামে ও ডানে ঘুরিয়ে নিতে হবে। 

তো যখন আপনি উপরের কাজ গুলো সঠিক ভাবে করতে পারবেন। তখন আপনার নতুন একটি একাউন্ট তৈরি হবে।

এবং তারপর আপনার নিকট যে নতুন ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড থাকবে। সে গুলো দিয়ে আপনি পরবর্তী সময়ে আপনার একাউন্টে লগ ইন করতে পারবেন। 

আইডি কার্ড রিইস্যুর জন্য আবেদন করুন

উপরোক্ত কাজ গুলো যখন সঠিক ভাবে করবেন। তারপর আপনাকে আপনার নতুন রেজিষ্ট্রেশন করা আইডি এর মধ্যে প্রবেশ করতে হবে।

এবং প্রবেশ করার পর আপনি “রিইস্যু” নামক একটি অপশন দেখতে পারবেন। আপনাকে উক্ত অপশন এর মধ্যে ক্লিক করতে হবে।

উক্ত অপশনে ক্লিক করার পরে আপনি এডিট করার যে বাটন টি দেখতে পারবেন। আপনাকে উক্ত বাটন এর মধ্যে ক্লিক করতে হবে। 

উক্ত বাটনে ক্লিক করার পরে আপনি আপনি আপনার এনআইডি এর বেশ কিছু তথ্য প্রদান করতে হবে। যেমন, 

  1. আপনার ভোটার আইডি কার্ড এর রিইস্যুর কারণ,
  2. আপনার জিডি এর নম্বর,
  3. আপনার থানার নাম,
  4. পুলিশ অফিসারের নাম,
  5. পুলিশ অফিসার এর পদবী,
  6. জিডি দায়ের কার তারিখ,

তবে যখন আপনি উপরের তথ্য গুলো প্রদান করবেন। তখন মনে রাখবেন যে, এখানে প্রদান করা তথ্য গুলো তে যেন কোনো ধারনের ভুল না হয়।

আর যখন আপনি সঠিক ভাবে উপরের তথ্য গুলো প্রদান করবেন। তারপর আপনাকে “পরবর্তী” নামক অপশন এর মধ্যে ক্লিক করতে হবে। 

রিইস্যুর ফি পরিশোধ করুন

উপরোক্ত কাজ গুলো করার পর এবার আপনাকে আপনার এআইডি রিইস্যু করার জন্য নির্ধারিত ফি প্রদান করতে হবে। আর যখন আপনি উক্ত ফি পরিশোধ করতে যাবেন।

তখন আপনি এই অপশন এর মধ্যে “You have total deposit of 0 BDT” এই লেখাটি দেখতে পারবেন। তাই উক্ত অপশন থেকে আপনাকে আপনার নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে দিতে হবে। 

আর এই এনআইডি রিইস্যুর জন্য আপনি প্রধানত দুই ধরনের ফি লক্ষ্য করতে পারবেন। যেমন, 

  1. আপনি যদি সাধারন ভাবে এনআইডি রিইস্যু করেন, তাহলে আপনাকে মোট ৩৪৫ টাকা ফি দিতে হবে। 
  2. আর আপনি যদি জরুরী এনআইডি রিইস্যু করেন, তাহলে আপনাকে মো ৫৭৫ টাকা ফি দিতে হবে। 

তো যদি আপনার খুব জরুরী হয়ে থাকে তাহলে আপনি “Urgent” ফি পরিশোধ করবেন। অন্যথায় আপনি সাধারন রিইস্যুর জন্য আবেদন করতে পারবেন। 

এনআইডি রিইস্যুর জন্য আবেদন সাবমিট করুন

যখন আপনি আপনার পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার জন্য রিইস্যু ফি পরিশোধ করবেন। তারপর আপনাকে আপনার জিডি এর স্ক্যান কপি প্রদান করতে হবে।

তবে আপনি চাইলে আপনার দায়ের করা জিডি এর ছবি তুলেও এখানে আপলোড করে দিতে পারবেন। তবে মনে রাখবেন, ছবি তোলার সময় জিডি এর মধ্যে থাকা তথ্য গুলো যেন ষ্পষ্ট ভাবে দেখা যায়। 

আর আপনি যখন সঠিক ভাবে আপনার জিডি এর কপিটি এখানে আপলোড করে দিবেন। তারপর আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে।

আর উক্ত কাজটি সম্পন্ন হতে আপনার প্রায় ৭ দিন থেকে শুরু করে কমপক্ষে ১৫ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। 

আর যখন আপনি এই সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। তারপর আপনার রিইস্যুর জন্য করা আবেদন টি এপ্রুভ হবে।

এবং এপ্রুভ হওয়ার পরে আপনি আপনার পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।

এবং কিভাবে আপনি আপনার পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করবেন। সেই পদ্ধতি গুলো নিচে দেখিয়ে দেওয়া হলো।

পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করুন

যদি আপনি সঠিক ভাবে উপরের কাজ গুলো করতে পারেন। তারপর আপনার আর কোনো কিছু করতে হবেনা।

এখন আপনি কোনো প্রকার ঝামেলা ছাড়াই আপনার এনআইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন।

এবং আপনি আসলে কখন আপনার পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন। সেটি আপনাকে আপনার মোবাইল নম্বরে এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে। 

যখন আপনার মোবাইল এর মধ্যে এসএমএস আসবে। তারপরে আপনি পুনরায় services.nidw.gov.bd এই ওয়েবসাইট এর মধ্যে প্রবেশ করবেন।

তারপর আপনি রেজিষ্ট্রেশন করার সময় যে ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়েছেন। সেগুলো দিয়ে আপনাকে লগ ইন করতে হবে। 

আর আপনার ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগ ইন করার পর। উক্ত ওয়েবসাইট থেকে আপনি আপনার পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।

আশা করি, এতে আপনার আর কোনো ধরনের সমস্যা হবেনা। 

Q:অনলাইনে আইডি কার্ড বের করার নিয়ম কি?

A: বিভিন্ন সময় আমাদের অনলাইন থেকে আইডি কার্ড বের করার দরকার হয়। তো যদি আপনি অনলাইনে আপনার আইডি কার্ড বের করতে চান।

তাহলে সবার আগে আপনাকে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন এর ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে।

এরপর আপনাকে আপনার ভোটার স্লিপ নম্বর ও জন্ম তারিখ দিয়ে রেজিষ্ট্রেশন করতে হবে। আর যখন আপনি এই তথ্য গুলো দিয়ে রেজিষ্ট্রেশন করবেন।

তারপর আপনি পুনরায় লগ ইন করে আপনার ভোটার আইডি কার্ড অনলাইন থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। 

Q:টোকেন দিয়ে আইডি কার্ড বের করার নিয়ম কি?

A: আপনি চাইলে আপনার নিকট থাকা টোকেন নম্বর দিয়েও আপনার আইডি কার্ড বের করতে পারবেন। তবে সেজন্য আপনাকে এই ওয়েবসাইট এর মধ্যে প্রবেশ করতে হবে।

তারপর আপনার যে টোকেন নম্বরটি আছে সেটি দেওয়ার পাশাপাশি আপনার জন্ম তারিখ প্রদান করতে হবে।

আর এই তথ্য ‍গুলো দিয়ে রেজিষ্ট্রেশন করার পর। আপনি আপনার টোকেন নম্বর দিয়ে আইডি কার্ড বের করতে পারবেন। 

আমাদের শেষকথা

আমাদের মধ্যে যেসকল মানুষ অনেক আগেই ভোটার রেজিষ্ট্রেশন করছেন। তাদের সমস্যা হলো, অনলাইন থেকে সেই পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড গুলো ডাউনলোড করা সম্ভব হয়না।

তো কিভাবে আপনি আপনার পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করবেন। আজকে আমি আপনাকে সেই পদ্ধতি গুলো স্টেপ বাই স্টেপ দেখিয়ে দিয়েছি। 

আশা করি, আপনি এই পদ্ধতি গুলো ফলো করে আপনার পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। তবে এরপরও যদি আপনার কোনো ধরনের সমস্যা হয়।

তাহলে অবশ্যই আপনার সমস্যাটির কথা লিখে নিচের কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন। 

সবশেষে বলবো, আপনি যদি জাতীয় পরিচয় পত্র সম্পর্কে সকল সমস্যার সমাধান পেতে চান। তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিট করবেন।

আর ধন্যবাদ, এতক্ষন থেকে আমাদের সাথে থাকার জন্য। ভালো থাকুৃন, সুস্থ থাকুন। 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top