মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম ২০২৪

মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম : (Motorcycle Registration Rules 2024)  আপনি যদি একজন বাইকার হয়ে থাকেন। তাহলে সেই বাইক চালানোর জন্য অবশ্যই আপনাকে রেজিষ্ট্রেশন করতে হবে। আর এই কাজটি করার জন্য আপনার নিকট বেশ কিছু ডকুমেন্টস এর দরকার হবে।

মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম
মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম

এবং নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে মোটরসাইকেল রেজিষ্ট্রেশন করতে হবে। তবে আমাদের মধ্যে এমন অনেক মানুষ আছেন।যাদের আসলে মোটরসাইকেল রেজিষ্ট্রেশন সম্পর্কে তেমন কোনো ধারনা নেই।

তাই তারা সর্বদাই জানতে চায় যে, মোটরসাইকেল রেজিষ্ট্রেশনকরার জন্য কি কি কাগজপত্র লাগবে। আবার অনেকেই জানতে চান যে, মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করার জন্য কত টাকা ফি দেওয়ার প্রয়োজন হয়।

আর আজকে আমি আপনাকে  মোটরসাইকেল লাইসেন্স করার নিয়ম এই যাবতীয় বিষয় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়ে দিব। যদি আপনি নতুন ব্যক্তি হিসেবে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করতে চান।

আপনি আরোও জানতে পারবেন…

তাহলে চেষ্টা করবেন আজকের পুরো লেখা টি মনোযোগ দিয়ে পড়ার। এবং আজকের দেখানো পদ্ধতি গুলো সঠিক ভাবে অনুসরণ করার।

Table of Contents

কেন মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করতে হবে?

আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে আমি আপনাকে অবশ্যই মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করার উপায় গুলো সম্পর্কে জানিয়ে দিব।

তবে তার আগে আমাদের জানতে হবে যে, কেন মোটর সাইকেল রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। তো আপনি যদি জানতে চান যে, কেন মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।

তাহলে জেনে রাখুন যে, ২০১৮ বাংলাদেশ সড়ক আইন এর মধ্যে এটা স্পষ্ট করে উল্লেখ করা আছে। আপনি যদি একজন মোটর সাইকেল চালক হয়ে থাকেন।

তাহলে আপনাকে বাধ্যতামূলক রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এবং আপনি যদি রেজিস্ট্রেশন করা ছাড়াই মোটরসাইকেল চালান। তাহলে সেটা হবে আইনের চোখে দন্ডনীয় অপরাধ।

এবং আপনি যদি এই মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন সম্পর্কে আরো বিস্তারিত ভাবে জানতে চান।

তাহলে আপনাকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর  চতুর্থ অধ্যায়ে নজর দিতে হবে। কেননা সেখানে স্পষ্ট করে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন এর সকল আইন গুলো উল্লেখ করা আছে।

এবং আপনি যদি সেই আইন এর ধারা গুলো পড়েন। তাহলে সেখানে দেখতে পারবেন ১৬ নম্বর ধারায় বিশেষ একটি আইন উল্লেখ করা আছে।

যেখানে বলা হয়েছে যে. কোন একজন ব্যক্তি যদি মোটর সাইকেল রেজিস্ট্রেশন করা ছাড়াই সড়কের মধ্যে চলাচল করে। তাহলে সেই ব্যক্তির মোটর সাইকেল চালানোর অনুমতি বাতিল হতে পারে।

আপনি বেশ ভালো করেই লক্ষ্য করতে পারছেন যে, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন আইন এর মধ্যে মোটর সাইকেল রেজিস্ট্রেশন ব্যতীত চলাচল সম্পূর্ণ অবৈধ।

তাই আপনি একজন বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে বাংলাদেশ এর আইন এর প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে। অবশ্যই আপনাকে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। অন্যথায় আপনাকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকম সমস্যার মধ্যে পড়তে হবে।

মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন মেয়াদ কত দিন?

উপরের আলোচনা থেকে আমরা মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জানতে পারলাম। তবে এই বিষয় টি জানার পাশাপাশি আমাদের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে জানতে হবে।

সেটি হল. মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন মেয়াদ কতদিন পর্যন্ত থাকে। আর আপনি যদি বর্তমান সময়ে নতুন ভাবে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করেন। তাহলে আপনার সেই রেজিস্ট্রেশন এর মেয়াদ দুই ধরনের হবে।

আর সে গুলো হলো, ২ (দুই) বছর মেয়াদ এবং ১০ (দশ|) বছর মেয়াদ। তো এখন যদি আপনি দুই বছর মেয়াদী মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করেন। তাহলে পরবর্তী সময়ে অর্থাৎ দুই বছর পরে আপনাকে পুনরায় রেজিস্ট্রেশন হালনাগাদ করতে হবে।

কিন্তু আপনি যদি ১০ বছর মেয়াদী মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করেন। সে ক্ষেত্রে কিন্তু আপনাকে রেজিস্ট্রেশন হালনাগাদ কিংবা নবায়ন করার প্রয়োজন পড়বে না।

তাই আপনি যখন নতুন ভাবে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করবেন। তখন অবশ্যই ১০ বছর মেয়াদী রেজিস্ট্রেশন করার চেষ্টা করবেন।

কিন্তু যদি আপনার দশ বছর মেয়াদী রেজিস্ট্রেশন করা সম্ভব না হয়। তাহলে আপনাকে দুই বছর মেয়াদী মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এবং দুই বছর শেষ হলে আপনাকে পুনরায় নবায়ন করতে হবে।

মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করতে কি কি লাগে?

দেখুন উপরের আলোচনা থেকে আমরা মোট দুইটি বিষয় সম্পর্কে জেনেছি। একটি হল আমাদের কেন মোটর সাইকেল রেজিস্ট্রেশন করতে হবে সে সম্পর্কে জেনেছি।

এবং আপনি কত বছর মেয়াদী মোটর সাইকেল রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন সে সম্পর্কে জেনেছি। তো এবার আমাদের জানতে হবে মোটর সাইকেল রেজিস্ট্রেশন করতে কি কি লাগে।

আর আপনি তো বেশ ভালো করে জানবেন যে, মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ডকুমেন্টস দেওয়ার প্রয়োজন হয়। আর সেই ডকুমেন্টস গুলো হল. 

  1. মোটরসাইকেল ক্রয় করার সময় শো রুম থেকে যে মানি রিসিপ্ট এবং ডেলিভারি চালান প্রদান করে, সেটির প্রয়োজন হবে।
  2. এ ছাড়াও মোটরসাইকেল এর মালিক সহ ডিলার এর একটি আবেদনপত্র প্রয়োজন হবে।
  3. আপনার মোটর সাইকেল টি আমদানি বিষয়ক যে সকল ডকুমেন্টস আছে সে গুলো প্রদান করতে হবে।
  4. আপনার মোটর সাইকেল টি ক্রয় করার সময় ডিলার অথবা শোরুম এর মধ্যে অর্থ পরিশোধ এর চালান কপি দিতে হবে।
  5. এর পাশাপাশি আপনার মোটরসাইকেল এর ইনভয়েস, গেইট পাস. প্যাকিং লিস্ট ইত্যাদি প্রদান করতে হবে।
  6. আপনার মোটরসাইকেল এর যে শুল্ক রশিদ রয়েছে সে গুলো দেখাতে হবে।
  7. আপনি আপনার মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করার জন্য যে রেজিস্ট্রেশন ফি প্রদান করেছেন। তার পেমেন্ট এর রশিদ দিতে হবে।
  8. যে ব্যক্তির নামে মোটরসাইকেল কেনা হয়েছে। সেই ব্যক্তির ভোটার আইডি কার্ড অথবা পাসপোর্ট অথবা টেলিফোন বিল ইত্যাদির যে কোনো একটি সত্যায়িত ফটোকপি দিতে হবে।
  9. আপনাকে অবশ্যই মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করার জন্য ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করতে হবে। সে ক্ষেত্রে আপনি আপনার লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স দিয়েও এই কাজটি করতে পারবেন।
  10. যদি একাধিক  ব্যক্তি একটি মোটরসাইকেল কিনে থাকেন। তাহলে প্রত্যেক টা ব্যক্তির সম্মতির হলফনামা প্রদান করতে হবে।
  11. যদি আপনি কোন নিলাম থেকে মোটরসাইকেল ক্রয় করে থাকেন। তাহলে সেই মোটরসাইকেল এর প্রস্তুত করার সময় ও প্রস্তুতকারক এর যাবতীয় বিবরণী সহ ছাড়পত্র প্রয়োজন হবে।

তো আপনি যদি নতুন ব্যক্তি হিসেবে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করতে চান। তাহলে আপনার যে সকল কাগজপত্র বা ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হবে।

সেই ডকুমেন্টস গুলোর তালিকা উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। এবং আপনি মোটর সাইকেল রেজিস্ট্রেশন করার আগে অবশ্যই এই প্রয়োজনীয় কাগজ গুলো আপনার সঙ্গে রাখবেন।

মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন ফি কত ২০২৪

এবার আসা যাক মূল বিষয়ে অর্থাৎ আপনি যদি মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করতে চান। তাহলে আপনাকে কত টাকা ফি প্রদান করতে হবে সে সম্পর্কে অবশ্যই আপনার সঠিক ধারণা থাকতে হবে।

আর  আপনার একটা বিষয় জেনে রাখা উচিত যে, একটি মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করার জন্য কত টাকা ফি দিতে হবে বা মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন খরচ, সেটা নির্ভর করে সেই মোটরসাইকেল এর সিসির উপর।

আর এই মোটরসাইকেল এর সিসির উপর নির্ভর করে কত টাকা রেজিস্ট্রেশন ফি দিতে হবে। তা নিচের তালিকায় উল্লেখ করা হলো বিআরটিএ মোটর সাইকেল রেজিস্ট্রেশন ফি। যেমন,

  1. আপনার মোটর সাইকেল টি যদি 100cc হয়, তাহলে আপনাকে রেজিস্ট্রেশন ফি হিসাবে ৩ হাজার টাকা দিতে হবে। 
  2. এর পাশাপাশি আপনাকে আপনার মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন এর ডিজিটাল নাম্বার প্লেট এর জন্য মোট ২ হাজার টাকা প্রদান করতে হবে।
  3. এবং মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করার সময় আপনাকে ট্যাক্স টোকেন হিসেবে আরো ২,০০০ টাকা ব্যয় করতে হবে।
  4. এ গুলো ছাড়াও রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট ৫৪০ টাকা, supplementary ডিউটি 939 টাকা এবং অন্যান্য ভ্যাট নিলে ১ হাজার ৩৩ টাকা ব্যয় হবে।

উপরের তালিকায় আপনি দেখতে পাচ্ছেন যে, মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করার জন্য বেশ কিছু ক্ষেত্রে টাকা খরচ করার প্রয়োজন হয়।

আর আপনি যদি দুই বছর মেয়াদী মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করেন। এবং আপনার মোটর সাইকেল যদি ১০০ সিসির উপরে হয়। তাহলে আপনাকে মোট ব্যয় করতে হবে, ১০ হাজার ১৫২ টাকা মাত্র।

তবে এর বাইরেও একটি মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করার জন্য আসলে কত টাকা ফি দিতে হয়। সে সম্পর্কে যেন আপনি সঠিক তথ্য জানতে পারেন।

সেজন্য নিচে একটি টেবিল প্রদান করলাম। যেখান থেকে আপনি জানতে পারবেন যে, কত সিসি মোটরসাইকেল এর রেজিস্টেশন করার জন্য কত টাকা ফি দিতে হয়।

মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন ফি
১০০ সিসি মোটরসাইকেল  ১০০ সিসির উপরে মেয়াদ 
৮ হাজার ৮২৯ টাকা ১০ হাজার ১৫২ টাকা ২ বছর (প্রথম কিস্তি)
১৮ হাজার ২৯ টাকা ১৯ হাজার ৩৫২ টাকা ১০ বছর

মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম

আপনি হয়তোবা বেশ ভালো করেই জানবেন যে, বর্তমান সময়ে অনলাইনের মাধ্যমে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন আবেদন করা সম্ভব।

তবে আপনি যদি অনলাইনে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন আবেদন করার নিয়ম গুলো সম্পর্কে না জানেন। তাহলে আপনি কোন ভাবেই অনলাইনে মোটর সাইকেল রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন না।

আর আপনার যেন অনলাইনে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করতে কোন ধরনের সমস্যা না হয়।

সে কারণে এবার আমি আপনাকে এই কাজ টি করার জন্য যে সকল পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। এবার আমি আপনাকে সে গুলো ধাপে ধাপে দেখিয়ে দিব। বং আপনি অবশ্যই এই পদ্ধতি গুলো সঠিক ভাবে ফলো করবেন।

ধাপ ১- প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করুন

দেখুন, আপনি যদি মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করতে চান। তাহলে সবার আগে আপনাকে আপনার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো সংগ্রহ করতে হবে।

কেননা আপনি যদি সঠিক সময়ে সঠিক কাগজ গুলো দেখাতে না পারেন। তাহলে কিন্তু আপনি কোন ভাবেই মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন না।

আর নতুন ব্যক্তিদের মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করার জন্য কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন হয়। তা উপরে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আপনি অবশ্যই সেই কাগজপত্র গুলো সংগ্রহ করে রাখবেন। এবং সে গুলো ভালোভাবে চেক করে নিবেন।

যেমন, আপনার শোরুম থেকে মোটরসাইকেল কেনার সময় যে সকল কাগজপত্র দেওয়া হবে। সে গুলো আপনার মোটরসাইকেল এর সাথে মিল আছে কিনা তা অবশ্যই যাচাই করে নিবেন। এবং তারপরে আপনাকে পরবর্তী ধাপে কাজ করতে হবে।

ধাপ ২- অনলাইনে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন ফি পরিশোধ

যখন আপনি আপনার সকল কাগজপত্র গুলো ম্যানেজ করবেন। তারপরে আপনাকে অনলাইনে মোটর সাইকেল রেজিস্ট্রেশন ফি পরিশোধ করে দিতে হবে।

আর আপনি যখন অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন ফি প্রদান করবেন। তখন আপনাকে এই লিংকে ক্লিক করতে হবে। এখানে ক্লিক করার সাথে সাথেই আপনি বিআরটিএ এর মূল ওয়েবসাইট এর মধ্যে প্রবেশ করবেন।

  • তারপর আপনাকে উক্ত ওয়েবসাইটের মধ্যে নিবন্ধন করে নিতে হবে। আর এই নিবন্ধন করার জন্য আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র এবং আপনার জন্ম তারিখ প্রদান করতে হবে।
  • এর পাশাপাশি আপনার যে সচল মোবাইল নম্বর রয়েছে। সেই মোবাইল নম্বরটি দিতে হবে। আর আপনি যদি সরাসরি নিবন্ধন করতে চান। তাহলে এই লিংকে ক্লিক করুন। 
  • আর আপনি যখন সফল ভাবে নিবন্ধন এর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন। তারপর আপনাকে পুনরায় এই ওয়েব সাইটের মধ্যে গিয়ে লগইন করতে হবে।
  • আর আপনি যখন লগইন করবেন তখন আপনি ”মোটর যান নিবন্ধন ফি” নামক একটি অপশন দেখতে পারবেন। আপনাকে সেই অপশন এর মধ্যে ক্লিক করতে হবে। 
  • তারপর আপনি মোটরসাইকেল এর বিভিন্ন সি সি এর তালিকা দেখতে পারবেন। তো এখান থেকেই আপনি আপনার মোটরসাইকেল এর যত সিসি রয়েছে সেই অপশন এর মধ্যে ক্লিক করবেন। 
  • যেমন ধরুন, আপনার মোটরসাইকেল যদি ৫০ সিসি হয়। তাহলে আপনাকে Small সিলেক্ট করতে হবে। এবং আপনার মোটরসাইকেল যদি 50 থেকে 125cc হয়। তাহলে আপনাকে Medium সিলেক্ট করে দিতে হবে।
  • এর পাশাপাশি আপনার মোটরসাইকেল যদি 125cc এর বেশি হয়। তাহলে আপনাকে Large অপশনে  ক্লিক করতে হবে।

আর যখন আপনি আপনার মোটরসাইকেল এর সিসি উল্লেখ করবেন। তারপরে আপনাকে আপনার বেশ কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করতে হবে।

আর আপনি সেই তথ্য গুলো অবশ্যই নির্ভুল ভাবে দেওয়ার চেষ্টা করবেন। যেমন, আপনার মোটরসাইকেল এর চেসিস নম্বর লিখতে হবে।

আপনার মোটরসাইকেল এর আসন সংখ্যা কয়টি তা লিখতে হবে। আপনার মোটরসাইকেল এর ওজন সঠিক ভাবে উল্লেখ করতে হবে।

এবং আপনি যখন এই যাবতীয় তথ্য গুলো প্রদান করবেন। তখন অবশ্যই আপনার শোরুম থেকে দেওয়া কাগজপত্র গুলোর সাথে মিলিয়ে নিবেন। যেন আপনি নিজের অজান্তেই কোন ধরনের ভুল তথ্য না দেন। 

  • এবার আপনার সামনে একটি অপশন আসবে এবং সেখানে আপনি ”হায়ার পারচেজ ভাড়ায় চালিত” ও নতুন মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশনের জন্য মালিকানা পরিবর্তন এই ঘরটির মধ্যে আপনি “NO” সিলেক্ট করে দিবেন।
  • এরপর আপনি আসলে কত বছর এর জন্য মোটর সাইকেল রেজিস্ট্রেশন করতে চাচ্ছেন তা সিলেক্ট করে দিবেন। যেমন আপনি যদি দুই বছর এর জন্য মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করতে চান।
  • তাহলে আপনাকে ”ফাস্ট ইনস্টলমেন্ট” সিলেক্ট করে দিতে হবে। এবং আপনি যদি ১০ বছর এর জন্য মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করতে চান। তাহলে আপনাকে ”ফুল পেমেন্ট” এর মধ্যে ক্লিক করতে হবে।
  • তারপর আপনার মোটরসাইকেল উৎপাদন হওয়ার সঠিক তারিখ প্রদান করতে হবে। আর এই তারিখ টি আপনি আপনার শোরুম থেকে দেওয়া কাগজ থেকে জেনে নিতে পারবেন।
  • এর পরবর্তী ধাপে যে ব্যক্তি মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করতে চান। সেই ব্যক্তির পিতা ও মাতার নাম ঠিকানা এবং তাদের মালিকানার ধরন উল্লেখ করে দিতে হবে।
  • আর যখন আপনি এই তথ্য গুলো প্রদান করবেন। তারপরে আপনাকে ”এগিয়ে যান” নামক অপশন এর মধ্যে ক্লিক করতে হবে।

এবার আপনাকে আপনার প্রদান করা তথ্য গুলো পুনরায় যাচাই করে নিতে হবে। এবং যদি এই তথ্য গুলো তে আপনি কোথাও ভুল করে থাকেন।

তাহলে অবশ্যই তা সংশোধন করে নিবেন। আর যখন আপনি এই কাজটি করবেন। তারপরে আপনাকে মোট কত টাকা মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন ফি দিতে হবে।

সেই টাকার পরিমান দেখতে পারবেন। এবং যদি আপনার সবকিছু ঠিক থাকে, তাহলে আপনাকে ”ফি জমা দিন” নামক অপশনের মধ্যে ক্লিক করতে হবে।

এখন আপনি মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন ফি জমা দেওয়ার মাধ্যম গুলো দেখতে পারবেন। যেমন, আপনি চাইলে বিকাশ, রকেট কিংবা কার্ড এর মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন ফি জমা দিতে পারবেন।

তো আপনি আপনার সুবিধা মতো যে মাধ্যমে টাকা দিতে পারবেন। সেটি সিলেক্ট করবেন এবং পরবর্তী অপশনে ক্লিক করবেন।

আর যখন আপনি সফলভাবে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন ফি প্রদান করবেন। তারপরে আপনি একটা সাকসেসফুল মেসেজ দেখতে পারবেন।

তো আপনি অবশ্যই এই পেমেন্ট রিসিভ এর কপি ডাউনলোড করে রাখবেন। এবং সাথে সাথে সেই ডাউনলোড করা অনলাইন কপিটি প্রিন্ট করে নিবেন। যাতে করে পরবর্তী সময়ে আপনি এই পেমেন্ট রিসিট দেখাতে পারেন। 

ধাপ ৩- অনলাইনে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন

উপরের পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করে যখন আপনি মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন ফি প্রদান করবেন। তারপরে আপনাকে পুনরায় অনলাইনে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করার জন্য আবেদন করতে হবে।

আর এই কাজটি করার জন্য আপনাকে এই লিংক এর মধ্যে ক্লিক করতে হবে। আর যখন আপনি উপরে দেওয়া লিঙ্ক এর মধ্যে ক্লিক করবেন। তারপরে আপনার সামনে নতুন একটি পেজ ওপেন হবে।

এবং সেই পেজ এর মধ্যে ” নিবন্ধন” নামক অপশনে ক্লিক করতে হবে। এবং যখন আপনি উক্ত অপশন এর মধ্যে ক্লিক করবেন।

তারপরে আপনাকে আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য গুলো প্রদান করতে হবে।

motorcycle registration application online motorcycle registration application online

এখানে আপনি আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য গুলো অবশ্যই সতর্কতার সহিত দেওয়ার চেষ্টা করবেন। কেননা আপনি যদি এখানে ভুল তথ্য প্রদান করেন।

তাহলে কিন্তু আপনি সফলভাবে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন না। এবং এই অনলাইনে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করার কাজটি যদি আপনার কাছে অনেক বেশি কঠিন মনে হয়।

তাহলে চিন্তার কোন কারণ নেই বরং আপনি যদি আপনার মোটরসাইকেল কেনার শোরুম এর মধ্যে গিয়ে। তাদের কে রেজিস্ট্রেশন করতে বলেন, তাহলে তারা খুব সহজেই আপনার এই কাজটি করে দিবে।

তবে আপনি যেভাবেই রেজিস্ট্রেশন করুন না কেন। অবশ্যই তার একটি অনলাইন কপি ডাউনলোড করে রাখবেন। এবং সেই অনলাইন কপি প্রিন্ট করে রাখবেন।

কারণ এই যাবতীয় কাগজপত্র গুলো আপনাকে পুনরায় বিআরটিএ এর অফিসে জমা দিতে হবে। 

ধাপ ৪- বিআরটিএ তে ফাইল জমা দিন

আপনি যখন উপরের সকল কাজ গুলো সঠিক ভাবে করতে পারবেন। এবং যাবতীয় অনলাইন কপি প্রিন্ট করে নিবেন। তারপর সেই সকল কাগজ গুলো নিয়ে আপনাকে বিআরটিএ এর অফিস এর মধ্যে যেতে হবে।

তারপর আপনার কাছে যে কাগজ পত্র গুলো রয়েছে। সেগুলো তাদের অফিসে জমা দিতে হবে। আর সেই সময়ে আপনার নিকট বেশ কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকতে হবে। যেমন,

  1. মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন ফি প্রদান করার রশিদ,
  2. আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি,
  3. আপনার সদ্য তোলা স্টাম্প সাইজের ছবি,
  4. অনলাইনে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন এর আবেদন কপি,

আর যখন আপনি বিআরটিএ এর অফিসে গিয়ে এই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো জমা দিবেন। তারপরে মোটরযান পরিদর্শক এর নিকট আপনার কাগজপত্র গুলো যাওয়ার পর, তিনি পুনরায় আপনার মোটর বাইক যাচাই করবে।

এবং কাগজে উল্লেখিত চেসিস নম্বর এর সাথে আপনার মোটরসাইকেল এর চেসিস নম্বর যাচাই করবে। আর যখন মোটরযান পরিদর্শক এর কাছে আপনার সকল কাগজপত্রের সত্যতা পাবে। তারপর তিনি আপনার ফাইলে স্বাক্ষর করবেন।

এবং তারপরে আপনাকে সেই কাগজপত্র গুলো অফিসের মধ্যে জমা করে রাখতে হবে। তবে কাজগজপত্র জমা করার সময় অবশ্যই আপনি একটি রিসিভ কপি পাবেন। সেটি অবশ্যই আপনার কাছে সংরক্ষণ করে রাখবেন।

এরপর আপনি আসলে আপনার মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন এর সার্টিফিকেট কবে পাবেন তার ডেট জানিয়ে দিবে।

সচরাচর একজন নতুন ব্যক্তি যদি মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করে থাকে। তাহলে সেই ব্যক্তি পরবর্তী ৭ থেকে ১০ দিন এর মধ্যে তার ট্যাক্স টোকেন এবং স্লিপ নিতে পারবেন।

আর যখন আপনি এই যাবতীয় বিষয় আপনার নিকট বুঝে পাবেন। তখন আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে যে, আপনি সফলভাবে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করতে পেরেছেন।

ধাপ ৫- ছবি ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট প্রদান

মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করার সর্বশেষ ধাপ হল ছবি ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট প্রদান করা। কেননা একজন ব্যক্তি রেজিস্ট্রেশন করার সাথে সাথেই তাকে নম্বর প্লেট বা সার্টিফিকেট দেওয়া হয় না।

বরং তাকে কয়েক টা দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। এবং মেসেজের মাধ্যমে সকল তথ্য জানিয়ে দেওয়া হয়। তো আপনাকে যখন মেসেজ করে জানানো হবে। তখন আপনাকে পুনরায় ছবি ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট প্রদান করতে হবে।

এবং আপনি যখন এই ছবি ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিতে যাবেন। তখন অবশ্যই আপনার নিকট যে কাগজ পত্র গুলো থাকবে সে গুলো সাথে নিয়ে যাবেন।

আর সেখানে যাওয়ার পরে বিআরটিএ এর কর্মরত কর্মকর্তারা আপনার ছবি তুলবে এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিবে। এরপর আপনার আর কোন ধরনের কাজ নেই বরং আপনাকে শুধুমাত্র অপেক্ষা করতে হবে।

এবং কিছুদিন অপেক্ষা করার পর যখন আপনার মোটরসাইকেল এর নম্বর প্লেট ও কার্ড কমপ্লিট হবে। তারপরে আপনাকে জানিয়ে দেওয়া হবে এবং তখন আপনি সেখানে গিয়ে আপনার সকল ডকুমেন্টস গুলো উত্তোলন করতে পারবেন।

Faqs

অন টেস্ট মানে কি?

“অন টেস্ট” মানে এমন একটি যানবাহন পরীক্ষার অধীনে রয়েছে এবং এটি রাস্তায় চলাচলের জন্য অনুমোদিত নয়।

বাংলাদেশে বাইকের সিসি লিমিট কত

বাংলাদেশে বাইকের সিসি লিমিট নির্ভর করে লাইসেন্সের ধরণের উপর:

  • মোটরসাইকেল (অ-গিয়ার):
    • প্রাইভেট: 150cc পর্যন্ত
    • পেশাদার: 250cc পর্যন্ত
  • মোটরসাইকেল (গিয়ার):
    • প্রাইভেট: 350cc পর্যন্ত
    • পেশাদার: Unlimited

পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স দিয়ে কি মোটর সাইকেল চালানো যায়?

হ্যাঁ, পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স (যেমন, লাইট মোটর ভেহিকল) দিয়ে 150cc পর্যন্ত মোটরসাইকেল (অ-গিয়ার) চালানো যায়।

১৫০ সিসি বাইক মানে কি?

১৫০ সিসি বাইক মানে হলো যেই বাইকের ইঞ্জিনের সিলিন্ডারের স্থানচ্যুতি ১৫০ কিউবিক সেন্টিমিটার (cc)।

১৫০ সিসি ইঞ্জিনের হর্স পাওয়ার কত?

১৫০ সিসি ইঞ্জিনের হর্স পাওয়ার বাইকের মডেল এবং ব্র্যান্ডের উপর নির্ভর করে। সাধারণত, 12-15 হর্স পাওয়ার হর্স পাওয়ার উৎপন্ন করে।

বলুন তো কত সালের আগে পর্যন্ত বাংলাদেশে কোন সিসি লিমিট ছিল না?

2007 সালের আগে বাংলাদেশে মোটরসাইকেলের জন্য কোন সিসি লিমিট ছিল না।

200cc এর গতি কত?

200cc বাইকের গতি বাইকের মডেল, ব্র্যান্ড, রাস্তার ধরণ এবং রাইডিংয়ের ধরন অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। সাধারণত, 200cc বাইকের সর্বোচ্চ গতি 120-140 কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা হতে পারে।

মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন নিয়ে আমাদের শেষ কথা 

আমাদের মধ্যে এমন অনেক মানুষ আছেন যারা মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করার কাজটি অনেক কঠিন মনে করে থাকেন।

তো তারা যেন খুব সহজেই মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করতে পারে। সে কারণে আজকের এই আর্টিকেলে আমি প্রত্যেক টি বিষয়কে ধাপে ধাপে দেখিয়ে দিয়েছি।

যে গুলো ফলো করার মাধ্যমে আপনি কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়াই আপনার মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন।তবে এরপরেও যদি আপনার কোন ধরনের সমস্যা হয়। তাহলে আমাদের কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন।

আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করব আপনার সমস্যার সমাধান করার জন্য। আর ধন্যবাদ এতক্ষণ ধরে আমার লেখা আর্টিকেল টি পড়ার জন্য। 

ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন এবং নতুন কিছু জানতে আমাদের ওয়েব সাইটে ভিজিট করুন। 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top