অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন আবেদন করার নিয়ম

বাংলাদেশের সকল নাগরিকের জন্য ভোটার আইডি কার্ড অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি ডকুমেন্টস। আর আমরা নতুন ভাবে ভোটার নিবন্ধন করার মাধ্যমে ভোটার আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে পারি। কিন্তু এই ভোটার আইডি কার্ড সংগ্রহ করার পর, দুর্ঘটনাশত সেই ভোটার আইডি কার্ডের মধ্যে থাকা তথ্যে ভুল থেকে যায়। 

আর যখন আমাদের ভোটার আইডি কার্ডের মধ্যে কোন তথ্যে ভুল থাকবে। তখন আমরা হতাশ হয়ে যাই এবং চিন্তা করি যে, কিভাবে সেই ভোটার আইডি কার্ডের মধ্যে থাকা ভুল তথ্য গুলো সংশোধন করা যাবে। 

তো আপনিও যদি এমন চিন্তার মধ্যে থাকেন, তাহলে বলে রাখি যে এটা স্বাভাবিক একটা বিষয়। আর যদি কোন কারনে আপনারও এই ধরনের সমস্যা হয়। তাহলে আপনি খুব সহজেই আপনার ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করে নিতে পারবেন। বলে রাখা ভালো যে বর্তমান সময়ে ইন্টারনেট এর বদৌলতে আপনি নিজের ঘরে বসে অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন আবেদন করতে পারবেন। 

 

Table of Contents

জাতীয় পরিচয়পত্রের যেসব তথ্য সংশোধন করা যাবে

প্রতিটা ভোটার আইডি কার্ড এর মধ্যে বিভিন্ন রকমের তথ্য থাকে। তবে আপনার ভোটার আইডি কার্ডের মধ্যে থাকা কোন তথ্য গুলো আপনি সংশোধন করতে পারবেন। তার একটি নির্দিষ্ট তালিকা নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে প্রকাশ করা হয়েছে। আর সেই তালিকা টি নিচে উল্লেখ করা হলো। যেমন,

  1. আপনার ভোটার আইডি কার্ডের মধ্যে থাকা নাম সংশোধন করতে পারবেন।
  2. জন্ম তারিখ সংশোধন করতে পারবেন।
  3. আপনার মাতার নাম সংশোধন করতে পারবেন।
  4. এর পাশাপাশি আপনার পিতার নাম সংশোধন করতে পারবেন।
  5. আপনার ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন করে নিতে পারবেন।
  6. এগুলো ছাড়াও আরো অন্যান্য তথ্য সংশোধন করতে পারবেন।

তো আপনার ভোটার আইডি কার্ডের মধ্যে থাকা কোন কোন ধরনের তথ্য গুলো তে ভুল থাকলে তা সংশোধন করা যাবে। সেই তালিকা টি উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। আর আপনার ভোটার আইডি কার্ডের মধ্যে যদি এই তথ্য গুলো তে ভুল থাকে। তাহলে আপনি অনলাইনে নিজের ঘরে বসে তা সংশোধন করার জন্য আবেদন করতে পারবেন। 

 

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগে?

উপরের আলোচনা থেকে আমরা জানতে পারলাম যে, জাতীয় পরিচয় পত্রের মধ্যে কোন কোন তথ্য গুলো সংশোধন করা যায়। তবে যখন আপনি আপনার ভোটার আইডি কার্ড এর মধ্যে থাকা ভুল তথ্য সংশোধন করতে চাইবেন। তখন আপনার নিকট বেশ কিছু প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস এর দরকার হবে। 

আর তথ্য সংশোধন ভেদে যে সকল ডকুমেন্টসের দরকার হয়। সেই ডকুমেন্ট গুলোর তালিকা নিচে দেওয়া হল। যেমন,

  1. শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, 
  2. ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন, 
  3. পাসপোর্ট, 
  4. ড্রাইভিং লাইসেন্স, 
  5. এমপিও শীট বা সার্ভিস বইয়ের কপি, 

সাধারণ ভাবে আপনি যখন ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করবেন। তখন উপরের যে কোনো দুটি ডকুমেন্টস হলেই আপনি অনলাইনের মাধ্যমে সংশোধন করার জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে কোনো কারণবশত যদি আপনার নিকট উপরের এই ডকুমেন্ট গুলো না থাকে। সেক্ষেত্রে আপনি আরো অন্যান্য ডকুমেন্টস এর মাধ্যমে তথ্য সংশোধন করতে পারবেন। যেমন,

  1. বিয়ের কাবিন, 
  2. অফিস প্রধানের প্রত্যয়ন, 
  3. ওয়ারিশ সনদ, 
  4. ভাই-বোনের জাতীয় পরিচয় পত্র,  
  5. সন্তানদের জাতীয় পরিচয়পত্র,

ভোটার আইডি কার্ড এর তথ্য সংশোধন করার জন্য যে সকল ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হয়। সেই ডকুমেন্ট গুলোর তালিকা উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। আর আপনি যখন আপনার ভোটার আইডি কার্ডের ভুল তথ্য সংশোধন করবেন। তখন আপনাকেও এই ডকুমেন্ট গুলো প্রদান করতে হবে। যার মাধ্যমে আপনি অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। 

 

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন

যদি কোন কারণে আপনি লক্ষ্য করতে পারেন যে, আপনার ভোটার আইডি কার্ডের মধ্যে থাকা তথ্যের মধ্যে ভুল রয়েছে। তাহলে আপনাকে সরাসরি অনলাইনের মাধ্যমে সেই ভুল তথ্য সংশোধন করার জন্য আবেদন করতে হবে। 

আর এই আবেদন করার জন্য আপনাকে যে সকল কাজ করতে হবে। সেই কাজ গুলো সংক্ষেপে নিচে তুলে ধরা হলো। যেমন,

  1. সবার প্রথমে আপনাকে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। 
  2. আপনি চাইলে এখানে ক্লিক করে সরাসরি উক্ত ওয়েবসাইটের মধ্যে প্রবেশ করতে পারবেন।
  3. এরপর আপনাকে উক্ত ওয়েবসাইট থেকে একটি একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে। 
  4. আর যখন আপনি সেই ওয়েবসাইটের মধ্যেই একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করবেন। তখন আপনাকে বেশ কিছু তথ্য প্রদান করতে হবে।
  5. আর সেই তথ্য গুলো হলো, আপনার ভোটার আইডি কার্ডের নম্বর, জন্ম তারিখ, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর ইত্যাদি। 

এরপর যখন আপনি সফল ভাবে একটি অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করবেন। তারপর আপনি আপনার প্রোফাইলের মধ্যে লগইন করে আপনার যে সকল তথ্যের মধ্যে ভুল রয়েছে। সেই তথ্য গুলো সংশোধন করার জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। 

আর এই আবেদন করার পর আপনাকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এবং যখন আপনার ভুল তথ্য গুলো সংশোধন করা হবে। তখন আপনাকে এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে। আর এসএমএস পাওয়ার পর আপনি পুনরায় আপনার তথ্য সংশোধন করা জাতীয় পরিচয়পত্র  সংগ্রহ করে নিতে পারবেন। 

 

অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম

উপরের আলোচনা তে আমি আপনাকে অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম কে খুব সংক্ষিপ্ত আকারে বলেছি। তবে আপনি যখন এ কাজ গুলো করতে যাবেন, তখন আপনাকে অবশ্যই বেশ কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। 

আর আপনার যাতে করে এই পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করতে কোন ধরনের সমস্যা না হয়। সে কারণে এবার আমি প্রত্যেক টি পদ্ধতি ধাপে ধাপে দেখিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। যে গুলো নিচে উল্লেখ করা হলো। 

 

ধাপ ১: ডকুমেন্টস গুলোর স্ক্যান/ ছবি নেয়া

দেখুন, আপনি যখন আপনার ভোটার আইডি কার্ডের মধ্যে থাকা কোন তথ্য ও সংশোধন করতে চাইবেন। তখন আপনাকে বেশ কিছু ডকুমেন্টস দেওয়ার প্রয়োজন পড়বে। আর এই ডকুমেন্ট গুলো অবশ্যই আপনাকে স্ক্যান করে নিতে হবে। 

কারণ হলো, যখন আপনি আপনার ডকুমেন্ট গুলো স্ক্যান করবেন। তখন সে গুলোর মধ্যে থাকা সকল তথ্য গুলো স্পষ্ট ভাবে দেখা যাবে। কিন্তু মোবাইল দিয়ে ছবি তুললে অনেক সময় সেই ডকুমেন্টস গুলোর মধ্যে স্পষ্টতা থাকে না। 

যার কারণে সঠিক ভাবে আবেদন করার পরেও ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য সংশোধন প্রক্রিয়া সময় মতো সম্পন্ন হয় না। তবে আপনি যদি একান্ত ভাবেই এই ডকুমেন্ট গুলো মোবাইল দিয়ে ছবি তুলতে চান। তাহলে অবশ্যই যথেষ্ট আলো এবং সোজা ভাবে ছবি তোলার চেষ্টা করবেন। 

 

ধাপ ২: NID ওয়েবসাইটে রেজিষ্ট্রেশন

যখন আপনি আপনার সকল ডকুমেন্টস গুলোর স্ক্যান কপি বা স্পষ্ট ছবি নিবেন। তারপরে আপনাকে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন অফিস এর মূল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। এরপর যদি আপনার এই ওয়েবসাইটের মধ্যে আগে থেকেই অ্যাকাউন্ট তৈরি করা থাকে। তাহলে আপনি সেই একাউন্টের ইমেইল এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করবেন। 

কিন্তু যদি আপনার আগে থেকে কোন একাউন্ট করা না থাকে। তাহলে আপনাকে আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য গুলো দিয়ে নতুন একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করে নিতে হবে। তবে একাউন্ট তৈরি করার জন্য আপনাকে আসলে কোন কোন পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। সে গুলো নিচে দেখিয়ে দেওয়া হল,

প্রথম ধাপঃ আমার প্রথমে আপনি এখানে ক্লিক করুন। তারপর আপনি নতুন একটি ওয়েবসাইটের মধ্যে প্রবেশ করবেন। যে ওয়েবসাইট টি দেখতে কেমন হবে, তা নিচের পিকচারে দেখানো হলো। 

Loading Image, Please wait……

তো এবার আপনাকে ”রেজিস্টার করুন” নামক বাটনের মধ্যে ক্লিক করতে হবে। আর তারপর আপনি নতুন একটি পেজে প্রবেশ করবেন। 

দ্বিতীয় ধাপঃ নতুন একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করার জন্য আপনাকে বেশ কিছু তথ্য প্রদান করতে হবে। যেমন, আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, জন্ম তারিখ ইত্যাদি প্রদান করার পরে। আপনাকে একটি ক্যাপচা কোড পূরণ করতে হবে। আর কোড টি প্রদান করার পরে আপনাকে সাবমিট নামক অপশনে ক্লিক করতে হবে।

Loading Image, Please wait……

তৃতীয় ধাপঃ আপনি যখন সাবমিট বাটনের মধ্যে ক্লিক করবেন। তারপর আপনাকে আপনার ঠিকানা প্রদান করতে হবে। তো এখানে আপনি আপনার বিভাগ, জেলা এবং উপজেলা সঠিক ভাবে প্রদান করবেন। আর যখন তথ্য গুলো প্রদান করা শেষ হবে, তারপর আপনাকে ”পরবর্তী” নামক বাটনের মধ্যে ক্লিক করতে হবে। 

Loading Image, Please wait……

চতুর্থ ধাপঃ যখন আপনি উপরের ধাপ গুলো সঠিক ভাবে ফলো করবেন। তারপর আপনাকে আপনার মোবাইল নম্বর প্রদান করতে হবে। মনে রাখবেন, এখানে আপনি এমন একটি মোবাইল নম্বর দেওয়ার চেষ্টা করবেন। যেটি সর্বদাই আপনার নিকট থাকবে। এবং সেই মোবাইল নাম্বার টি অবশ্যই সচল হতে হবে। 

কেননা আপনার এই মোবাইল নাম্বারে একটি ভেরিফিকেশন কোড যাবে। আর সেই ভেরিফিকেশন কোড টি আপনাকে এখানে প্রদান করতে হবে। 

Loading Image, Please wait……

পঞ্চম ধাপঃ উপরের কাজ গুলো সম্পন্ন করার পর এবার আপনার সামনে একটি কিউআর কোড আসবে। মূলত এই কোড টি আসার পর আপনি সেটি মিনিমাইজস করে রেখে দিবেন। এবং এরপর আপনি ফেস ভেরিফিকেশন এর জন্য যে সকল কাজ করার দরকার হয়, সে গুলো করবেন। কেননা ফেস ভেরিফিকেশন করতে গেলে এই কিউবার কোডটির প্রয়োজন হবে। 

 

ফেইস ভেরিফিকেশন করুন

যখন আপনি আপনার ব্যক্তিগত তথ্য গুলো প্রদান করে জাতীয় নির্বাচন কমিশন অফিস এর মূল ওয়েবসাইটে অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করবেন। তখন অবশ্যই আপনাকে আপনার নিজস্ব ফেইস ভেরিফিকেশন করতে হবে। 

আর এই ফেস ভেরিফিকেশন করার জন্য আপনাকে গুগল প্লে স্টোর থেকে Nid Wallet নামের একটি অ্যাপ্লিকেশন ইন্সটল করে নিতে হবে। তারপর এই অ্যাপসের মাধ্যমে আপনি আপনার ফেস ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন। 

তবে এই ফেস ভেরিফিকেশন করার জন্য আপনাকে আসলে কোন কোন পদ্ধতি ফলো করতে হবে। সে গুলো নিচে দেখিয়ে দেওয়া হল। 

  1. সবার প্রথমে আপনি গুগল প্লে স্টোরে প্রবেশ করুন।
  2. এরপর সার্চ অপশন থেকে Nid Wallet লিখে সার্চ করুন। 
  3. এখন আপনি সবার প্রথমে যে অ্যাপটি দেখতে পাচ্ছেন, সেটি ইন্সটল করে নিন এবং ওপেন করুন।
  4. আর উক্ত অ্যাপস টি ওপেন করার সাথে সাথেই অ্যাকাউন্ট তৈরি করার সময় আপনাকে যে কিউআর কোড টি দেওয়া হয়েছিল। সেটি এই অ্যাপসের মাধ্যমে স্ক্যান করে নিন।
  5. এরপর আপনি ফেস ভেরিফিকেশন এর অপশন দেখতে পারবেন। 
  6. এখন আপনাকে আপনার চেহারা সঠিক ভাবে মোবাইলের ক্যামেরার সামনে তুলে ধরুন। 

মনে রাখবেন যখন আপনি আপনার ফেস ভেরিফিকেশন করবেন। তখন অবশ্যই আপনার মাথাটি একবার বাম পাশে, একবার ডান পাশে ঘুরাবেন। আর যখন এই অ্যাপ্লিকেশনটির মধ্যে ”ওকে” লেখা আসবে। তখন আপনি বুঝতে পারবেন যে, আপনার ফেস ভেরিফিকেশন সঠিক ভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

আর যখন আপনার ফেস ভেরিফিকেশন এর কাজ শেষ হবে। তারপর আপনি পুনরায় বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন অফিসের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করবেন। আর সেখানে সেখানে প্রবেশ করার সাথে সাথে আপনার একাউন্টের পাসওয়ার্ড সেট আপ করতে হবে। এই পাসওয়ার্ড টি অবশ্যই ভালো ভাবে সংগ্রহ করে রাখবেন। কেননা পরবর্তী সময়ে এই পাসওয়ার্ডের দরকার পড়বে।

 

ধাপ ৩: তথ্য সংশোধন

তো আপনি যখন উপরের সব পদ্ধতি অনুসরণ করে নতুন একটি অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েট করবেন। তারপরে আপনাকে আপনার ইমেল আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে সেই অ্যাকাউন্টের মধ্যে লগইন করতে হবে। আর লগইন করার পরে নিচের পিকচারের মত প্রোফাইল নামক একটি অপশন দেখতে পারবেন। তো এবার আপনাকে সেই অপশনের মধ্যে ক্লিক করতে হবে। 

Loading Image, Please wait……

এবার আপনি আসলে আপনার যে ভুল তথ্য সংশোধন করতে চান। সেই ভুল তথ্যের এডিট অপশনে ক্লিক করবেন। তারপর আপনি এডিট করার সুযোগ পাবেন। 

এবং যখন আপনার ভুল তথ্য গুলো এডিট করা শেষ হবে। তারপর আপনি ”পরবর্তী” নামক বাটনে ক্লিক করবেন। আর এরপর আপনার এন আইডি কার্ডের মধ্যে থাকা ভুল তথ্য এবং সংশোধনের পরে সেই তথ্য গুলোর প্রিভিউ দেখতে পারবেন। 

ধাপ ৪: ফি প্রদান

এবার আপনাকে একটা কথা বলে রাখা উচিত। সেটি হল, আপনি যখন আপনার ভোটার আইডি কার্ডের মধ্যে থাকা ভুল তথ্য সংশোধন করবেন। তখন অবশ্যই আপনাকে সেই তথ্য সংশোধন এর উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি প্রদান করতে হবে। 

তবে যখন আপনি আপনার কোন ধরনের তথ্য সংশোধনের জন্য এডিট করবেন। তারপর আপনি সেই পেজটি কে ক্লোজ করে দিবেন না। বরং আপনি আগে পেমেন্ট কমপ্লিট করবেন, তারপরে আপনাকে বাকি কাজ গুলো করতে হবে। 

 

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফি জমা দেওয়ার নিয়ম

আপনার তথ্যের উপর ভিত্তি করে সংশোধনের জন্য যে ফি দেওয়ার প্রয়োজন পড়বে। সেটি আপনি বিভিন্ন মাধ্যমে প্রদান করতে পারবেন। যেমন, বিকাশ, রকেট, ওকে ওয়ালেট এর মাধ্যমে আপনি আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন ফি জমা দিতে পারবেন। 

তবে এবার আমি আপনাকে বিকাশের মাধ্যমে কিভাবে জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন ফি জমা দিতে হয়। সে সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। 

বিকাশের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্রের (NID Fee) প্রদান

বর্তমান সময়ে আমাদের বাংলাদেশের প্রায় অধিকাংশ মানুষ বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করে। তো আপনি যদি বিকাশ ব্যবহার করেন, তাহলে আপনি নিচের পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করে। জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন ফি জমা দিতে পারবেন। 

সে জন্য আপনাকে নিচের পদ্ধতি গুলো ফলো করতে হবে। যেমন,

  1. সবার প্রথমে আপনি আপনার বিকাশ একাউন্ট এর মধ্যে প্রবেশ করুন।
  2. এরপর আপনি ”সরকারি ফি” নামক অপশনে ক্লিক করে সেখান থেকে ”Nid Services” এর মধ্যে ক্লিক করুন।
  3. এবার আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের আইডি নম্বর টি ইংরেজি তে টাইপ করে দিন।
  4. তারপরে আপনাকে আপনার আবেদনের ধরন সিলেক্ট করতে হবে।
  5. সবশেষে আপনি আপনার বিকাশ একাউন্ট এর পিন নম্বরটি দিয়ে আপনার ফি পরিশোধ করে দিতে পারবেন।

তো আপনি আসলে কিভাবে বিকাশের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্রের সংশোধন ফি পরিশোধ করবেন। সেই পদ্ধতি গুলো উপরে ধাপে ধাপে দেখিয়ে দেওয়া হয়েছে। আশা করি, এতে আপনার কোন ধরনের সমস্যা হবে না। 

ধাপ ৫: প্রমাণপত্র / ডকুমেন্ট আপলোড ও আবেদন সাবমিট

এবার আপনি আসলে যে সকল তথ্য সংশোধন করতে চান। সেই তথ্য অনুসারে নির্দিষ্ট ডকুমেন্টস গুলো সাবমিট করতে হবে। তো যখন আপনি আপনার সংশোধন ফি সঠিক ভাবে পরিশোধ করবেন। তারপরে আপনি পুনরায় সংশোধন করার ওয়েবসাইটে যাওয়ার পরে, আপনার ডকুমেন্ট গুলো সাবমিট করে দিবেন। 

আর এই ডকুমেন্ট গুলো সাবমিট করার পরে আপনি আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের মধ্যে থাকা ভুল তথ্য সংশোধন এর আবেদন সম্পন্ন করতে পারবেন। 

 

ধাপ ৬: জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফরম ডাউনলোড

যখন আপনি সফল ভাবে ভুল তথ্য সংশোধন করার আবেদন করবেন। তারপরে আপনি পুনরায় আপনার একাউন্টের ড্যাশবোর্ডে আসতে পারবেন। আর সেই ড্যাশবোর্ডে আসার পরে আপনি যে আবেদন টি করেছেন। সেই আবেদন কপি ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। 

আর আপনি আপনার প্রয়োজনে অবশ্যই এই আবেদন কপিটি ডাউনলোড করে। কোন কম্পিউটারের দোকান থেকে প্রিন্ট করে নিবেন। যাতে করে পরবর্তী সময়ে সেটি বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করতে পারেন। 

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফি কত?

উপরের আলোচনা থেকে আমরা জানতে পারলাম যে, ভোটার আইডি কার্ডের মধ্যে থাকা ভুল তথ্য সংশোধন করার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ সংশোধন ফি দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। তো এখন অনেকের মনে প্রশ্ন জেগে থাকবে, ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফি কত টাকা। 

আর আপনার মনে যদি এই ধরনের প্রশ্ন জেগে থাকে। তাহলে আপনি নিচের তালিকা টি লক্ষ্য করুন। যেমন, 

  1. এনআইডির তথ্য সংশোধন, ২৩০ টাকা।
  2. অন্যান্য তথ্য সংশোধন,  ১১৫ টাকা।
  3. উভয় তথ্য সংশোধন, ৩৪৫ টাকা।
  4. রিইস্যু, ৩৪৫ টাকা।
  5. রিইস্যু জরুরী, ৫৭৫ টাকা।

বিভিন্ন কারণে যখন আপনি আপনার ভোটার আইডি কার্ড এর তথ্য সংশোধন করবেন। তখন কোন ধরনের সংশোধনী কাজের জন্য কত টাকা ফি দেওয়ার প্রয়োজন পড়বে। তার তালিকা উপরে উল্লেখ করা হলো। এবং আপনাকেও এই তালিকা অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি দিতে হবে। 

ভোটার আইডি কার্ড জন্ম তারিখ সংশোধন

আমি আলোচনা শুরুতেই আপনাকে একটা কথা বলেছিলাম। সেই কথাটি হল, ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার জন্য বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন রকম ডকুমেন্টস প্রদান করতে হয়। 

তো যখন আপনি আপনার ভোটার আইডি কার্ডের মধ্যে ভুল জন্ম তারিখ সংশোধন করবেন। তখন আপনার এসএসসি পরীক্ষার শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ প্রদান করতে হবে। যদি আপনার এই ধরনের কোন সার্টিফিকেট না থাকে। তাহলে আপনি আপনার ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন সাবমিট করতে পারবেন। 

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন জটিলতা

এবার আমি আপনার সাথে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় শেয়ার করব। সেই বিষয়টি হলো আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের মধ্যে ভুল তথ্য থাকলে, আপনি খুব সহজেই সংশোধন করে নিতে পারবেন। কিন্তু যদি আপনার নিকট কোনো ধরনের ডকুমেন্টস না থাকে। তাহলে আপনার জন্য এই সংশোধন প্রক্রিয়া টি অনেক কষ্টকর হয়ে দাঁড়াবে। 

যেমন ধরুন, আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের মধ্যে জন্ম তারিখ ভুল আসলো। এখন আপনি যদি সেই ভুল জন্ম তারিখ সংশোধন করতে যান। তাহলে অবশ্যই আপনাকে প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র দেখাতে হবে। যার মাধ্যমে আপনি প্রমাণ করতে পারবেন যে, আপনার জন্ম তারিখ টি আসলেই ভুল এসেছে। 

তবে আপনার নিকট যদি উপযুক্ত ডকুমেন্টস থাকে। তাহলে আপনার চিন্তা করার কোন দরকার নেই। বরং আপনি আজকের দেখানো পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করে। আপনার যে কোনো ধরনের ভুল তথ্য সংশোধন করে নিতে পারবেন। 

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত দিন লাগে?

এবার আসা যাক ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কতদিন লাগে সে সম্পর্কে। তো বিভিন্ন প্রকার ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য সংশোধন করার জন্য বিভিন্ন সময়ের প্রয়োজন হয়ে থাকে। 

তবে একটি ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার জন্য সর্বোচ্চ ৪৫ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। কিন্তু স্বাভাবিক ভাবে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার জন্য, ০৭ দিন থেকে ১৫ দিন এর মত সময় লাগে। 

Q: নিজ পিতা স্বামী মাতার নামের বানান সংশোধন করতে আবেদনের সাথে কি কি দলিল জমা দিতে হবে?

A: যদি আপনার পিতা অথবা মাতার নামের বানান ভুল হয়। সেক্ষেত্রে সেই ভুল নাম সংশোধন করার জন্য আপনাকে আপনার এসএসসি পরীক্ষার সার্টিফিকেট এর পাশাপাশি আপনাকে ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন সনদ এর কপি জমা দিতে হবে। 

Q:স্মার্ট কার্ড কিভাবে সংশোধন করা যায়?

A:স্মার্ট কার্ড সংশোধন করার প্রক্রিয়াটি খুবই সহজ। সে জন্য আপনাকে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন অফিসের মূল ওয়েবসাইটে যেতে হবে। তারপর আপনাকে একটি একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করে তারপর সেই অ্যাকাউন্টের মধ্যে গিয়ে। আপনি আপনার স্মার্ট কার্ড সংশোধন করার জন্য আবেদন করতে পারবেন। 

তবে তার জন্য আপনাকে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস জমা দিতে হবে। এর পাশাপাশি নির্দিষ্ট পরিমাণ সংশোধন ফি পরিশোধ করে দিতে হবে। 

Q: ভোটার আইডি কার্ড কতবার সংশোধন করা যায়?

A:এখন পর্যন্ত ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার মধ্যে কোন প্রকার লিমিটেশন প্রদান করা হয়নি। অর্থাৎ আপনি চাইলে বর্তমান সময়ে দুই বা ততধিক বা তারও বেশি সময় আপনার ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য সংশোধন করার জন্য আবেদন করতে পারবেন। 

তবে প্রথমবার সংশোধন করতে আপনার যে পরিমাণ ফি দিতে হবে। পরবর্তীতে সময়ে তার থেকে বেশি টাকা ফি প্রদান করতে হবে।  

আমাদের শেষ কথা 

আপনাদের যাদের ভোটার আইডি কার্ডের মধ্যে ভুল তথ্য এসেছে। তারা কিভাবে তাদের এই ভুল তথ্য সংশোধন করবেন। আজকের এই আর্টিকেলে ধাপে ধাপে সেই পদ্ধতি গুলো দেখিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

আশা করি, এই পদ্ধতি গুলো বুঝতে আপনার কোন ধরনের সমস্যা হবে না। তবে এরপরও যদি কোন ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। তাহলে অবশ্যই সেটি কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন।

আর আপনি যদি ভোটার আইডি কার্ড, পাসপোর্ট, ভিসা রিলেটেড এই ধরনের অজানা বিষয় গুলো খুব সহজ ভাষায় জানতে চান। তাহলে অবশ্যই নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করবেন। আর এতক্ষণ ধরে আমাদের সাথে থাকার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top