বাচ্চাদের ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২৩ | e passport for child in Bangladesh

বাচ্চাদের ই পাসপোর্ট করার নিয়ম : আপনি যদি ১৫ বছর বয়সী শিশু কিংবা তার থেকে কম বয়সী শিশুর পাসপোর্ট করতে চান।

বাচ্চাদের ই পাসপোর্ট করার নিয়ম | e passport for child in Bangladesh
বাচ্চাদের ই পাসপোর্ট করার নিয়ম

তাহলে আপনাকে বেশ কিছু নিয়ম ফলো করতে হবে। আর আজকে আমি আপনাকে সেই নিয়ম গুলো সম্পর্কে বলবো।

যে গুলো ফলো করে আপনি খুব সহজেই আপনার ১৫ বছর এর কম বয়সী শিশুর ই পাসপোর্ট করতে পারবেন। আর আপনি যদি সেই নিয়ম গুলো সম্পর্কে জানতে চান। তাহলে আজকের লেখাটি মন দিয়ে পড়ুন। 

জেনে নিন শিশুদের ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম

আমাদের সামাজিক দিক থেকে যে সকল বাচ্চারের বয়স ১৫ বছর কিংবা এর থেকে কম। আমরা তাদের কে অপ্রাপ্তবয়স্ক কিংবা বাচ্চা বলে থাকি।

আর যখন আপনি এই ধরনের কম বয়সী বাচ্চার ই পাসপোর্ট করবেন। তখন পাসপোর্ট অফিস থেকে আপনার আবেদন কে যথেষ্ট বিচার বিবেচনা করা হবে।

আপনার জন্য আরোও লেখা আছে

সর্বনিম্ন কত বছর বয়সে পাসপোর্ট করা যায় এর জন্য বলবো বাচ্ছার যে কোন বয়সে পাসপোর্ট করতে পারবেন।

আর অনলাইনে বাচ্চাদের ই পাসপোর্ট করার নিয়ম গুলো কে এবার আমি খুব সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরবো। যাতে করে আপনার বুঝতে সুবিধা হয়। 

  1. সবার প্রথমে আপনাকে ই পাসপোর্ট এর মূল ওয়েবসাইটে যেতে হবে। 
  2. তারপর আপনাকে পাসপোর্ট করার জন্য আবেদন করতে হবে। 
  3. বাচ্চাদের ই পাসপোর্ট করার নিয়ম হিসেবে অবশ্যই আপনার নিকট বাচ্চার পিতা ও মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র থাকতে হবে। 
  4. উক্ত ডকুমেন্টস গুলো দেওয়ার পরে আপনাকে অনলাইন থেকে পাসপোর্ট ফি পরিশোধ করে দিতে হবে। 
  5. সবশেষে আপনার অনলাইন পাসপোর্ট আবেদন টি প্রিন্ট করে জমা দিতে হবে।

তো উপরে আপনি বাচ্চাদের ই পাসপোর্ট করার নিয়ম কে খুব সংক্ষিপ্ত আকারে দেখতে পাচ্ছেন। তবে যখন আপনি বাচ্চাদের ই পাসপোর্ট করবেন।

তখন আপনাকে আরো বেশ কিছু কাজ করতে হবে। আর এবার আমি আপনাকে ধাপে ধাপে সেই নিয়ম গুলো সম্পর্কে জানিয়ে দিব। চলুন এবার সেই নিয়ম গুলো স্টেপ বাই স্টেপ দেখে নেওয়া যাক।

বাচ্চাদের ই-পাসপোর্ট করতে কি কি লাগবে?

আমরা সবাই জানি যে, যখন কোনো একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করবে। তখন সেই ব্যক্তির বিভিন্ন ধরনের কাজগজপত্র বা ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হবে।

কিন্তুু যখন আপনি আপনার শিশুর জন্য ই পাসপোর্ট করবেন। তখনও কিন্তুু আপনার নিকট বেশ কিছু প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র বা ডকুমেন্টস এর দরকার হবে।

তো যদি আপনি অপ্রাপ্তবয়স্ক বা ১৫ বছর এর কম বয়সী শিশুর ই পাসপোর্ট করতে চান। তাহলে আপনার নিচের ডকুমেন্টস গুলোর দরকার হবে। 

  1. সেই শিশুটির জন্ম নিবন্ধন সনদ এর প্রয়োজন হবে। 
  2. উক্ত বাচ্চাটির পিতা ও মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র এর কপি।
  3. যোগাযোগ করার জন্য একটি মোবাইল নম্বর এর দরকার হবে। 
  4. সেজন্য উক্ত শিশুর পরিবার বা অন্য কোনো আত্মীয় স্বজনের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করা যাবে।
  5. তবে যদি আপনার বাচ্চার বয়স ৬ বছর এর কম হয়। তাহলে আপনাকে সেই শিশুটির ল্যাব প্রিন্ট গ্রে ব্যাকগ্রাউন্ড এর ছবি দরকার হবে। 
  6. আপনার শিশুটি যদি কোন সরকারী চাকরিজীবির সন্তান হয়। তাহলে এনওসি বা অনাপত্তি সনদ এর প্রয়োজন হবে।
  7. নাগরিক সনদপত্র

মূলত বাচ্চাদের ই পাসপোর্ট করার জন্য যেসকল ডকুমেন্টস বা কগজপত্র এর প্রয়োজন হবে। তার তালিকা উপরে দেখতে পাচ্ছেন।

আর যখন আপনি কোনো বাচ্চার ই পাসপোর্ট করবেন। তখন অবশ্যই আপনার সাথে এই প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলো রাখবেন। 

জন্ম নিবন্ধন

দেখুন আপনি যখন একটি শিশুর ই পাসপোর্ট করবেন। তখন অবশ্যই সেই শিশুটির জন্ম নিবন্ধন সনদ এর দরকার হবে। আর এখানে একটা কথা বলে রাখা উচিত।

সেটি হলো, আপনি যখন বাচ্চার পাসপোর্ট করার সময় জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রদান করবেন। তখন উক্ত সনদ টি অবশ্যই ১৭ ডিজিট এর হতে হবে। অর্থ্যৎ, সেই জন্ম নিবন্ধন টি ডিজিটাল হতে হবে।

কেননা, ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন এর সকল তথ্য গুলো অনলাইন ডেটাবেজ এর মধ্যে জমা থাকে।

এর পাশাপাশি আপনার শিশুর জন্ম নিবন্ধন সনদটি যদি বাংলার পাশাপাশি ইংরেজিতে থাকে। তাহলে আপনার জন্য আরো ভালো হবে।

আর আপনি চাইলে এখন খুব সহজে আপনার বাচ্চার জন্ম নিবন্ধন অনলাইন থেকে যাচাই করে নিতে পারবেন। 

পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র

দেখুন, পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করার সময় জাতীয় পরিচয় পত্র সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি ডকুমেন্টস। কিন্তুু যখন আপনি আপনার বাচ্চার জন্য পাসপোর্ট আবেদন করবেন।

তখন তো তার জাতীয় পরিচয় পত্র থাকবে না। সেজন্য উক্ত সময় সেই শিশুর পিতা ও মাতার এনআইডি এর দরকার হবে।

কিন্তুু যদি আপনার বাচ্চার বয়স ১ দিন থেকে ২০ দিন এর মধ্যে হয়। তাহলে আপনি  সেই শিশুটির জন্ম নিবন্ধন সনদ দিয়েই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।

তবে এর থেকে বেশি বয়সী শিশুর পাসপোর্ট করার সময়। সেই শিশুটির বাবা মা এর জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি জমা দিতে হবে। 

জরুরী যোগাযোগ

আপনি যে কোনো বয়সের মানুষের জন্য পাসপোর্ট করুন না কেন। উক্ত পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করার সময় আপনাকে একটি যোগাযোগ নম্বর দিতে হবে।

আর প্রাপ্ত বয়স্করা ইচ্ছে করলে নিজের যোগাযোগ নম্বর দিতে পারলেও। যখন কোনো শিশুর জন্য ই পাসপোর্ট আবেদন করা হবে।

তখন সেই শিশুটির পিতার বা মাতার মোবাইল নম্বর দিতে হবে। অথবা আপনি চাইলে উক্ত শিশুর আত্মীয় স্বজনদের মোবাইল নম্বর দিতে পারবেন। 

ছবি

পাসপোর্ট আবেদন এর আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস হলো, ছবি। কেননা, যখন আপনি নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তির পাসপোর্ট আবেদন করবেন।

তখন অবশ্যই আপনাকে সেই ব্যক্তির সদ্য তোলা ছবি প্রদান করতে হবে। আর আপনি যখন ৬ বছর এর কম বয়সী শিশুদের পাসপোর্ট আবেদন করবেন।

তখন আপনাকে সেই শিশুর সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি প্রদান করতে হবে।

কিন্তুু যদি আপনার বাচ্চার বয়স ৬ বছর কিংবা এর থেকে বেশি বয়সী হয়। তাহলে সেই শিশুটির ছবি জমা দেওয়ার প্রয়োজন পড়বে না।

আর এই ছবি গুলো অবশ্যই আবেদন পত্র এর সাথে যুক্ত করে দিতে হবে। 

এনওসি- NOC (সরকারি চাকরীজীবির সন্তান হলে)

আমাদের মধ্যে এমন অনেক মানুষ আছেন। যারা বর্তমান সময়ে সরকারী চাকরি করেন।

তো এই সকল মানুষের সন্তানদের পাসপোর্ট করার জন্য অবশ্যই আপনাকে নো অবজেকশন সনদ দিতে হবে।

কারন, আপনি আপনার এনওসি দিয়েই আপনার উপর নির্ভর করা সন্তানদের জন্য ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।

আর যখন আপনি আপনার এনওসি দিয়ে পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করবেন। তখন আপনার কোনো ধরনের পুলিশ ভেরিফিকেশন করার প্রয়োজন হবেনা।

সেই সাথে যখন আপনি এনওসি দিয়ে পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করবেন। তখন আপনি সাধারন পাসপোর্ট ফি প্রদান করে অতি জরুরী পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।

এটা আপনার জন্য একটি বাড়তি সুবিধা প্রদান করা হবে। 

ফি পরিশোধের চালান

আমরা সবাই জানি যে, বর্তমান সময়ে ই পাসপোর্ট এর আবেদন ফি অনলাইন থেকে পরিশোধ করা ‍যায়।

আর যখন আপনি আপনার শিশু সন্তানের জন্য পাসপোর্ট আবেদন করবেন। তখনও আপনি অনলাইন থেকে এই ফি পরিশোধ করতে পারবেন।

আর এই কাজ টি আপনি অনলাইন থেকে “চালান অ্যাপস” ডাউনলোড করে। উক্ত অ্যাপস থেকে পাসপোর্ট ফি পরিশোধ করে দিতে পারবেন।

অথবা আপনি যখন অনলাইন থেকে ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করবেন। তখন উক্ত ওয়েবসাইট থেকে ডেবিট অথবা ক্রেডিট কার্ড এর মাধ্যমে কিংবা বিকাশ, নগদ, রকেট মোবাইল ব্যাংকিং দিয়েও ফি পরিশোধ করে দিতে পারবেন।

তবে আপনি যদি উপরের মাধ্যম গুলো দিয়ে পাসপোর্ট ফি পরিশোধ করতে না চান। তাহলে আপনি সরাসরি কোনো ব্যাংক থেকেও উক্ত চালান জমা দিতে পারবেন।

আর আপনি যখন ব্যাংক থেকে চালান জমা দিবেন। তখন পাসপোর্ট আবেদন করার সময় আপনাকে সেই চালান কপি যুক্ত করে দিতে হবে। 

শিশুর ই-পাসপোর্ট করবেন যেভাবে

আপনি প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের পাসপোর্ট আবেদন এবং শিশুর পাসপোর্ট আবেদন এই দুটোই আপনি অনলাইন থেকে আবেদন করতে পারবেন।

আর সেজন্য আপনাকেও সবার প্রথমে অনলাইন থেকে আবেদন করতে হবে। যখন আপনি সঠিক ভাবে অনলাইনে আবেদন করবেন। তারপর আপনাকে পাসপোর্ট আবেদন ফি পরিশোধ করে দিতে হবে।

আর যখন আপনি বাচ্চাদের ই পাসপোর্ট ফি প্রদান করবেন। তারপর আপনাকে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলো প্রদান করতে হবে।

যেমন, চালান কপি, জন্ম নিবন্ধন, পিতা মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র ইত্যাদি। এই যাবতীয় কাগজপত্র বা ডকুমেন্টস গুলো নিয়ে আপনাকে পাসপোর্ট অফিস এর মধ্যে গিয়ে জমা দিতে হবে।

তবে একটি শিশুর ই পাসপোর্ট আবেদন মূলত দুইটি নিয়মে করা সম্ভব। আর সেই নিয়ম ‍গুলো হলোঃ 

  1. আপনি চাইলে পিতা বা মাতার পাসপোর্ট আবেদন করার সাথে সাথে আপনার শিশুর পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। 
  2. অথবা আপনি চাইলে আপনার শিশুর জন্য আলাদা ভাবে ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।

আর আপনি যদি পিতা মাতার পাসপোর্ট আবেদন করার সাথে সাথে শিশুর পাসপোর্ট এর আবেদন করেন। তাহলে আপনার ঝামেলা একটু কম হবে।

কিন্তুু আপনি যদি আলাদা ভাবে আপনার শিশুর ই পাসপোর্ট এর আবেদন করেন। তাহলে আপনাকে আরো অতিরিক্ত ডকুমেন্টস প্রদান করার প্রয়োজন হবে। 

বাচ্চাদের ই পাসপোর্ট করতে কত দিন লাগে?

আমরা উপরের আলোচনা থেকে বাচ্চাদের ই পাসপোর্ট করার নিয়ম গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছি। তো এখন অনেকের মনে একটি প্রশ্ন জাগবে। সেটি হলো, বাচ্চাদের ই পাসপোর্ট করতে কত দিন লাগে।

তো যারা আসলে এই বিষয় টি সম্পর্কে জানতে চান। তাদের বলবো, আমরা সাধারন ভাবে একজন ব্যক্তির পাসপোর্ট করতে যতোদিন এর প্রয়োজন হয়।

ঠিক একই সময়ে আপনি আপনার বাচ্চার পাসপোর্ট করতে পারবেন। এই দিক থেকে কোনো ধরনের পার্থক্য নেই। 

সর্বনিম্ন কত বছর বয়সে পাসপোর্ট করা যায়?

আমরা অনেকেই জানিনা যে, সর্বনিন্ম কত বছর বয়সে পাসপোর্ট করা যায়। তো আপনি চাইলে আপনার শিশুর বয়স ১ দিন থেকে শুরু করে ২০ দিনের মধ্যে হয়।

আর ই পাসপোর্ট করতে বয়স কত লাগে এর কোন নিয়ম নাই যে কোন বয়সে করা যাবে।

তাহলেও আপনি সেই ছোট্ট শিশুর পাসপোর্ট করতে পারবেন। তবে এই বয়সী শিশুর জন্ম নিবন্ধন দিয়েই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করা সম্ভব।

আরোও জনাতে পারবেন

আর যদি এর থেকে বেশি বয়সী শিশুর পাসপোর্ট করার দরকার হয়। তাহলে অবশ্যই সেই শিশুর পিতা ও মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র এর প্রয়োজন হবে। 

বাচ্চাদের পুলিশ ভেরিফিকেশন হবে কিনা?

তাদের জন্য বলব হ্যা হবে। আপনাকে বাচ্চার জন্মনিবন্ধন এবং বাবা মায়ের আইডি কার্ড এর ফোটো কপি সাথে নিয়ে পুলিশের সাথে দেখা করতে হবে।

শিশুদের ই পাসপোর্ট নিয়ে আমাদের কিছুকথা

প্রিয় পাঠক, বিভিন্ন সময় আমাদের শিশুদের জন্য ই পাসপোর্ট আবেদন করার প্রয়োজন হয়।

তো সেই সময়ে আপনাকে কি কি নিয়ম ফলো করে বাচ্চাদের ই পাসপোর্ট আবেদন করতে হবে।

আজকের আলোচনা তে সেই নিয়ম গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

আশা করি, আজকের দেখানো নিয়ম গুলো ফলো করে আপনি আপনার বাচ্চার ই পাসপোর্ট এর আবেদন করতে পারবেন।

আর এই ধরনের পাসপোর্ট কিংবা ভিসা সম্পর্কিত কোনো অজানা তথ্য জানতে চাইলে। নিচের কমেন্ট সেকশনে একটি কমেন্ট করে দিবেন। পরিশেষে ধন্যবাদ, এতক্ষন ধরে আমাদের সাথে থাকার জন্য। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top