জন্ম তারিখ দিয়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার নিয়ম : (Birth registration Verification with date of birth) বিভিন্ন সময় আমাদের জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার প্রয়োজন হয়।
আবার এমন অনেক সময় আমাদের জন্ম নিবন্ধন কপি ডাউনলোড করার প্রয়োজন হয়। তো আপনি কিভাবে অনলাইন থেকে আপনার জন্ম নিবন্ধন যাচাই করবেন।
সেই নিয়ম গুলো নিয়ে আজকের আলোচনা তে বিস্তারিত বলবো। আর আপনি যদি জন্ম তারিখ দিয়ে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে চান। তাহলে আজকের পুরো লেখা টি মন দিয়ে পড়ুন।
জন্ম তারিখ দিয়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার উপায়
যেহুতু আপনি অনলাইন থেকে আপনার জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে চান। সেহুতু আপনাকে একটা বিষয় সম্পর্কে জানতে হবে।
সেটি হলো, আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদ এর নম্বর গুলো যদি ১৭ ডিজিট এর হয়। তাহলে আপনি অনলাইনে আপনার জন্ম তারিখ দিয়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে পারবেন।
কিন্তুু আপনার জন্ম সনদ এর মধ্যে যদি ১৬ টি ডিজিট থাকে। তাহলে আপনি অনলাইনে আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদ যাচাই করতে পারবেন না।
এর কারন হলো, যে নিবন্ধন সনদ এর মধ্যে ১৬ টি করে ডিজিট আছে। সেই সনদ এর তথ্য গুলো অনলাইনে সার্ভারে জমা নেই।
তাই আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদ এর মধ্যে যদি ১৭ টি ডিজিট থাকে। তবেই আপনি আজকের দেখানো নিয়ম গুলো ফলো করে।
জন্ম তারিখ দিয়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে পারবেন। কিন্তু আপনি যদি জন্ম নিবন্ধন নম্বর ১৬ ডিজিট থেকে কিভাবে ১৭ ডিজিট করতে হয় জানতে চান তাও করতে পারবেন।
তো চলুন, এবার জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার নিয়ম গুলো ধাপে ধাপে জেনে নেয়া যাক।
অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার সহজ উপায়
সবার শুরুতে আপনি বাংলাদেশ জন্ম ও মৃত্যু সনদ এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট এর মধ্যে প্রবেশ করুন। এরপর আপনার জন্ম নিবন্ধনে থাকা ১৭ ডিজিট এর নম্বর গুলো প্রদান করুন।
তার ঠিক নিচের অপশন এর মধ্যে আপনার জন্ম তারিখ দিয়ে “Search” বাটন এর মধ্যে ক্লিক করুন। আর তারপর আপনি অনলাইনে আপনার জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে পারবেন।
কিভাবে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করবো?
আপনি মাত্র কয়েকটা ধাপ অনুসরন করার মাধ্যমে আপনার জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে পারবেন। আর এই কাজটি করতে যেন আপনার কোনো ধরনের সমস্যা না হয়।
সে কারনে এবার নিচের আলোচনায় জন্ম নিবন্ধন যাচাই করা প্রত্যেক টি ধাপ কে খুব সহজ ভাবে তুলে ধরা হলো।
স্টেপ-১ঃ সবার প্রথমে আপনাকে বাংলাদেশ Birth and Death Registration এর ওয়েবসাইটে যেতে হবে। এবং যখন আপনি সেই ওয়েবসাইট এর মধ্যে প্রবেশ করবেন। তখন আপনি ঠিক নিচের মতো একটি নতুন পেজ দেখতে পারবেন।
স্টেপ-২ঃ তো নতুন পেজে প্রবেশ করার পরে আপনি কয়েক টি ফাঁকা বক্স দেখতে পারবেন। মূলত এই বক্স গুলো তে আপনার জন্ম নিবন্ধন এর তথ্য গুলো প্রদান করতে হবে।
স্টেপ-৩ঃ এখন প্রথমে আপনি আপনার জন্ম নিবন্ধন এর মধ্যে থাকা ১৭ ডিজিট এর নম্বর টি নির্ভুল ভাবে বসিয়ে দিবেন। কারন, এখানে যদি আপনি ভুল করেন। তাহলে আপনি আপনার জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে পারবেন না।
স্টেপ-৪ঃ তার ঠিক নিচের বক্সে আপনি আপনার জন্ম তারিখ দেয়ার অপশন দেখতে পারবেন। আর এখানে আপনি আপনার জন্ম তারিখ টি (Year-Month-Day) এই ফরম্যাটে দিবেন।
মনে রাখবেন, এটি হলো অনলাইনে জন্ম তারিখ যাচাই করার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ন একটি বিষয়।
স্টেপ-৫ঃ এবার আপনাকে একটি ক্যাপচা কোড দেয়া হবে। আর আপনাকে একটি কোডটি সঠিক ভাবে পূরন করতে হবে।
স্টেপ-৬ঃ এখন আপনি “Search” অপশন এর মধ্যে ক্লিক করুন।
আর যখন আপনি উপরের নিয়ম গুলো সঠিক ভাবে ফলো করবেন। তখন আপনি অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে পারবেন। আশা করি, এখানে আপনার কোনো ধরনের সমস্যা হবেনা।
নাম দিয়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার নিয়ম
আমাদের মধ্যে এমন অনেক মানুষ আছেন। যারা আসলে নিজের নাম দিয়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে চায়।
কিন্তুু সমস্যা হলো, আপনার বা আমার মতো সাধারন পাবলিক এর হাতে এই সুযোগ টি নেই। অর্ধ্যাৎ আমরা সাধারন জনগন অনলাইনে নিজের নাম দিয়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে পারবো না।
তাই বলে নাম দিয়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করা যাবেন, বিষয় টি এমন নয়। বরং নাম দিয়েও জন্ম নিবন্ধন যাচাই করা সম্ভব।
তবে এই কাজটি করতে হলে আপনাকে আর ঘরে বসে থাকলে হবেনা। কারন, শুধু নাম দিয়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার জন্য। আপনাকে ইউনিয়ন পরিষদ / সিটি কর্পোরেশন / পৌরসভা কার্যালয়ে যেতে হবে।
তারপর সেখানে আপনি আপনার নাম বলবেন। তখন তারা অনলাইন ডেটাবেজ থেকে আপনার জন্ম নিবন্ধন এর তথ্য গুলো খুজে বের করে নিতে পারবে।
জন্ম নিবন্ধন যাচাই কপি ডাউনলোড করার উপায়
তো এতক্ষন এর আলোচনা তে আপনি যে সকল নিয়ম দেখতে পাচ্ছেন। সেই নিয়ম গুলো ফলো করে যদি আপনি অনলাইনে আপনার জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে পারেন।
তাহলে আপনি নিশ্চিত হবেন যে, আপনার হাতে থাকা জন্ম নিবন্ধন সনদ টি ডিজিটাল। তো এখন আপনি চাইলে খুব সহজেই আপনার জন্ম নিবন্ধন যাচাই কপি ডাউনলোড করতে পারবেন।
আর কখনও যদি আপনার জন্ম নিবন্ধন যাচাই কপি ডাউনলোড করার প্রয়োজন হয়। তাহলে আপনি প্রথমে উপরের নিয়ম গুলো ফলো করে আপনার জন্ম নিবন্ধন যাচাই করবেন।
এরপর যখন আপনি যাচাই করবেন। তখন উক্ত যাচাই পেজটি পিডিএফ ফাইল হিসেবে ডাউনলোড করে রাখবেন।
এবং পরবর্তী সময়ে সেই পিডিএফ ফাইলকে প্রিন্ট করতে পারবেন। আর এভাবে খুৃব সহজে জন্ম নিবন্ধন যাচাই কপি ডাউনলোড করা যায়।
১৬ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার নিয়ম
আমি আলোচনার শুরুতে আপনাকে একটি কথা বলেছি। সেটি হলো, আপনি যদি অনেক আগে জন্ম নিবন্ধন করেন। তাহলে আপনার নিবন্ধন সনদে ২ টি বিষয় লক্ষ্য করতে পারবেন।
সেগুলো হলো, আপনার জন্ম সনদ টি হাতে লেখা রয়েছে। এছাড়াও উক্ত সনদ এর এর মধ্যে মাত্র ১৬ টি ডিজিট রয়েছে। আর সে কারনে এই ধরনের পুরাতন জন্ম সনদ গুলো অনলাইনে যাচাই করা সম্ভব হয়না।
কারন, যখন আপনি ১৬ ডিজিট এর নম্বর দিয়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করবেন। তখন আপনি কোনো তথ্য দেখতে পারবেন না।
এর প্রধান কারন হলো, বাংলাদেশ সরকার এর নিয়ম অনুযায়ী। অনলাইন ডেটাবেজ এর মধ্যে শুধুমাএ সেইসব জন্ম নিবন্ধন এর তথ্য জমা থাকবে। যে জন্ম নিবন্ধন সনদ গুলোতে ১৭ টি করে ডিজিট থাকবে।
আর যদি আপনারও এমন সমস্যা থাকে। তাহলে আপনার চিন্তা করার কোনো দরকার নেই। কারন, এবার আমি আপনাকে এমন একটি উপায় বলবো।
যে উপায় টি অনুসরন করে, আপনি আপনার ১৬ ডিজিট এর জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে পারবেন।
কিভাবে ১৬ ডিজিট নম্বর ১৭ ডিজিট করবো?
এই কাজটি করার জন্য প্রথমে আপনি আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদ টি হাতে নিন। এরপর আপানি নিবন্ধন সনদে থাকা নম্বর গুলোর দিকে তাকান।
এখন সেই জন্ম নিবন্ধন নম্বর গুলোর সবার শেষ ৫ সংখ্যার আগে একটি ০ (শূন্য) যোগ করে দিন। তাহলে আপনি আপনার ১৬ ডিজিট জন্ম নিবন্ধন কে ১৭ ডিজিটে রুপান্তর করতে পারবেন।
যেমন ধরুন, আপনার জন্ম নিবন্ধন এর নম্বর হলো, ১৯৮৩৭৩৬৮০২৮৫২৩৬৩. তো এখন এই নম্বরের শেষ ৫ টি নম্বরের আগে একটি শুন্য যোগ করে দিলে হবে, ১৯৮৩৭৩৬৮০২৮০৫২৩৬৩.
আর এই সহজ পদ্ধতির মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই আপনার ১৬ ডিজিটের জন্ম সনদ কে ১৭ ডিজিট করতে পারবেন।
জন্ম নিবন্ধন সম্পর্কে আরও তথ্য
আজকের আলোচনার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত আমি জন্ম নিবন্ধন যাচাই নিয়ে বিভিন্ন শেয়ার করেছি। যেমন, প্রথমেই আমি আপনাকে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার উপায় গুলো বলেছি।
এর পাশাপাশি কিভাবে আপনি জন্ম নিবন্ধন যাচাই কপি ডাউনলোড করবেন। সেই উপায় গুলো সম্পর্কে বলেছি।
তো এখন আমি আপনাকে জন্ম নিবন্ধন যাচাই নিয়ে আরো বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর দিবো। যে গুলো সম্পর্কে জেনে নেয়াটা অতি প্রয়োজনীয়। চলুন এবার তাহলে সেই অজানা তথ্য গুলো সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
Q: নাম ও জন্ম তারিখ দিয়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করা উপায় কি?
A: আপনি অনলাইনে এই ওয়েবসাইট থেকে খুব সহজেই নামও জন্ম তারিখ দিয়ে। আপনার জন্ম নিবন্ধন যাচাই করে নিতে পারবেন।
Q: পুরাতন জন্ম নিবন্ধন অনলাইন যাচাই করা যাবে?
A: জ্বী, আপনি চাইলে পুরাতন জন্ম নিবন্ধন অনলাইন যাচাই করতে পারবেন। তবে এই কাজটি করার জন্য আগে আপনার জন্ম নিবন্ধন নম্বর ১৭ ডিজিট করতে হবে।
আর যখন আপনি আপনার পুরাতন জন্ম নিবন্ধন এর ১৭ ডিজিট নম্বর সংগ্রহ করতে পারবেন। তখন আপনিও অনলাইনে পুরাতন জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে পারবেন।
Q: কিভাবে নাম দিয়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করবো?
A: আপনি একজন সাধারন জনগন হিসেবে কোনো ভাবে শুধু নাম দিয়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে পারবেন না। তবে আপনি যদি একান্ত ভাবে আপনার নাম দিয়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে চান।
তাহলে আপনাকে আপনার সিটি কর্পোরেশন অথবা ইউনিয়ন পরিষদ এর মধ্যে যেতে হবে। তাহলে আপনি শুধুমাএ নাম দিয়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে পারবেন।
Q: কোড দিয়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই কিভাবে করবো?
A: আপনি যদি অনলাইনে আপনার জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে চান। তাহলে অবশ্যই আপনার জন্ম নিবন্ধন এর ১৭ ডিজিটের নম্বর ও জন্ম তারিখের প্রয়োজন হবে।
Q: জন্ম নিবন্ধন যাচাই অ্যাপস কোনটি?
A: এখন পর্যন্ত জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার কোনো অ্যাপস রিলিজ করা হয়নি। তবে আপনি বাংলাদেশ জন্ম ও মৃত্যু সনদ এর ওয়েবসাইট থেকে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে পারবেন।
Q: জন্ম নিবন্ধন যাচাই yyyy mm dd মানে কি?
A: আপনি যখন অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করবেন। তখন অবশ্যই আপনাকে সঠিক জন্ম তারিখ দিতে হবে। এবং জন্ম তারিখ টি (বছর-মাস-দিন) এই ফরম্যাটে দিতে হবে।
নাহলে আপনি আপনার জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে পারবেন না।
জন্ম নিবন্ধন নিয়ে আমাদের শেষকথা
প্রিয় পাঠক, আপনার যদি জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার প্রয়োজন হয়। কিংবা জন্ম নিবন্ধন যাচাই কপি ডাউনলোড করার দরকার হয়।
তাহলে আজকের এই লেখাটি আপনার জন্য অনেক বেশি হেল্পফুল হবে। কারন, অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার নিয়ম গুলোকে স্টেপ বাই স্টেপ দেখিয়ে দিয়েছি।
আর আমার দীর্ঘ বিশ্বাস আছে যে, আপনি যদি আজকের দেখানো নিয়ম গুলো সঠিক ভাবে ফলো করেন। তাহলে আপনি খুব সহেজেই আপনার জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে যাচাই করতে পারবেন।
তো আপনি যদি এই ধরনের অজানা তথ্য গুলো কে খুব সহজ ভাষায় জানতে চান। তাহলে আমাদের সাথে থাকার চেস্টা করুন।
আর ধন্যবাদ, এতক্ষন ধরে আমার লেখা আর্টিকেল টি পড়ার জন্য। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
